EUR/USD পেয়ারের 5-মিনিটের চার্টের বিশ্লেষণ
মঙ্গলবার EUR/USD কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের তুলনামূলকভাবে লক্ষণীয় একটি নিম্নমুখী মুভমেন্ট পরিলক্ষিত হয়েছে। তবে এই মুভমেন্ট সামগ্রিক প্রবণতা, বাজার পরিস্থিতি, কিংবা বৃহত্তর প্রেক্ষাপটে কোনো প্রভাব ফেলেনি। মার্কিন ডলারের মূল্য বৃদ্ধি পেতে শুরু হয়েছিল সোমবার, যখন ঘোষণা দেওয়া হয় যে ট্রাম্প ইউরোপীয় ইউনিয়নের ওপর ৫০% শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত পিছিয়ে দিয়েছেন, যা মূলত ১ জুন থেকে কার্যকর হওয়ার কথা ছিল। মঙ্গলবার ডলার আরও কিছুটা সমর্থন পায় যুক্তরাষ্ট্রের ডিউরেবল গুডস অর্ডার সংক্রান্ত প্রতিবেদনের মাধ্যমে, যেটির ফলাফল প্রত্যাশার তুলনায় কম দুর্বল ছিল। বলা যায়, শেষ পর্যন্ত ডলার মৌলিক ও সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটে কিছুটা যুক্তিসঙ্গত প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে — তবে এখনই আনন্দিত হওয়ার সময় আসেনি।
অবশ্যই, ডলার চিরকাল দরপতনের মধ্যে থাকবে না। দেরিতে হলেও, ট্রেডাররা মনে করিয়ে দেবে যে বাণিজ্যযুদ্ধই মূল্যের একমাত্র নির্ধারক নয়। তখন হয়তো ইউরোপীয় কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আগ্রাসী নমনীয় মুদ্রানীতি ও ফেডারেল রিজার্ভের পক্ষ থেকে নমনীয়করণের অনুপস্থিতির মতো বিষয়গুলো সামনে আসবে। কিন্তু ট্রেডার হিসেবে আমরা কীভাবে বুঝবো যে মার্কেটের ট্রেডাররা বাণিজ্য যুদ্ধ থেকে মনোযোগ সরিয়ে অন্য উপাদানের দিকে ফিরছে — যা ডলারকে সমর্থন করতে পারে? উত্তর খুব সহজ: টেকনিক্যাল বিষয়গুলো বিশ্লেষণের মাধ্যমে। বর্তমানে ট্রেন্ডলাইন এখনো এই পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার ইঙ্গিত দিচ্ছে। তাই এই মুহূর্তে ডলারের শক্তিশালী পুনরুদ্ধারের কোনো যথার্থ ভিত্তি নেই।
৫ মিনিটের টাইমফ্রেম অনুযায়ী, মঙ্গলবারের ট্রেডিং সিগন্যালগুলো খুব দুর্বল ছিল। সবকিছুই অন্যরকম হতে পারত যদি ডিউরেবল গুডস সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশ না হতো। শুরুতে পেয়ারটির মূল্য 1.1362 লেভেল ব্রেক করে ওপরের দিকে উঠে যায়, এরপর নিম্নমুখী মোমেন্টাম স্তিমিত হয়ে পড়ে এবং মূল্য 1.1362 লেভেলের উপরে কনসোলিডেট করে। তখন নতুন করে ডলারের দরপতন প্রত্যাশিত ছিল, কিন্তু প্রকাশিত প্রতিবেদনের ইতিবাচক ফলাফল বাজার পরিস্থিতি সম্পূর্ণ বদলে দেয়, ফলে এই পেয়ারের মূল্য আবারও নিম্নমুখী হয়।
COT রিপোর্ট
সর্বশেষ COT রিপোর্ট ২০ মে প্রকাশিত হয়েছিল। উপরের চার্টে স্পষ্টভাবে দেখা যাচ্ছে যে, নন-কমার্শিয়াল ট্রেডারদের নেট পজিশনের সংখ্যা দীর্ঘ সময় ধরে ঊর্ধ্বমুখী ছিল। ২০২৪ সালের শেষে কিছু সময়ের জন্য বিক্রেতারা মার্কেটে প্রাধান্য বিস্তার করেছিল, কিন্তু তারা দ্রুত নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে। ট্রাম্প দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই ডলারের মূল্য নাটকীয়ভাবে হ্রাস পেয়েছে। আমরা ১০০% নিশ্চিত হয়ে বলতে পারি না যে ডলারের দরপতন চলতেই থাকবে, তবে বর্তমান বৈশ্বিক পরিস্থিতি সেই দিকেই ইঙ্গিত দিচ্ছে।
ইউরোর মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ার পক্ষে কোনো মৌলিক কারণ নেই; তবে ডলারের দরপতন হওয়ার জন্য একটি বড় কারণ রয়েছে। দীর্ঘমেয়াদে এই পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা এখনো বিদ্যমান, যদিও এই মুহূর্তে "প্রবণতা" শব্দের প্রভাবই বা কী? ট্রাম্প যদি বাণিজ্য যুদ্ধের যবনিকা টানেন, তবে ডলার আবারও শক্তিশালী হতে পারে, কিন্তু আদৌ কি তিনি তা করবেন?
লাল এবং নীল লাইনগুলো আবারও একে অপরকে অতিক্রম করেছে, যা মার্কেটে নতুন করে এই পেয়ারের মূল্যের বুলিশ প্রবণতার ইঙ্গিত দিচ্ছে। সর্বশেষ সাপ্তাহিক রিপোর্ট অনুযায়ী, "নন-কমার্শিয়াল" ট্রেডারদের লং পজিশনের সংখ্যা 3,500 কমেছে, এবং শর্ট পজিশনের সংখ্যা 6,800 বেড়েছে। ফলস্বরূপ, নিট পজিশনের সংখ্যা 10,300 কমেছে। তবে, COT রিপোর্টগুলো এক সপ্তাহ পরে প্রকাশিত হয়। এখন আবারও মার্কেটের ট্রেডাররা সক্রিয়ভাবে এই পেয়ার ক্রয় করছে।
EUR/USD পেয়ারের 1 ঘন্টার চার্টের বিশ্লেষণ
ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে স্থানীয় পর্যায়ে EUR/USD পেয়ারের মূল্যের একটি নতুন ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা বিদ্যমান রয়েছে, যা বিগত চার মাস ধরে পরিলক্ষিত সামগ্রিক প্রবণতার অংশ। ডলারের মূল্যের ভবিষ্যৎ মুভমেন্ট এখনো সম্পূর্ণরূপে বৈশ্বিক বাণিজ্যযুদ্ধ সংক্রান্ত অগ্রগতির ওপর নির্ভরশীল রয়েছে। যদি বাণিজ্য চুক্তি স্বাক্ষর হয় এবং শুল্ক হ্রাস পায়, তাহলে ডলারের পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া শুরু করতে পারে। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো শান্তিচুক্তি দৃষ্টিগোচর হয়নি এবং ট্রাম্প এখনো অপ্রত্যাশিত সিদ্ধান্ত ও বক্তব্য দিয়ে ট্রেডারদের বারবার চমকে দিচ্ছেন। মার্কেটের ট্রেডাররা এখনো সতর্ক অবস্থায় রয়েছে এবং তারা ট্রাম্পের প্রতি আস্থা রাখতে পারছে না। প্রবণতার পরিবর্তন হিসেবে বিবেচিত হওয়ার জন্য মূল্যকে অবশ্যই ট্রেন্ডলাইনের নিচে কনসোলিডেশন করতে হবে।
২৮ মে ট্রেডিংয়ের জন্য বিবেচনাযোগ্য গুরুত্বপূর্ণ লেভেলগুলো হলো: 1.0823, 1.0886, 1.0949, 1.1006, 1.1092, 1.1147, 1.1185, 1.1234, 1.1274, 1.1362, 1.1426, 1.1534, 1.1607, সেইসাথে সেনকৌ স্প্যান বি লাইন (1.1214) এবং কিজুন-সেন লাইন (1.1338) রয়েছে। ইচিমোকু সূচকের লাইনগুলো দিনের বেলায় অবস্থান পরিবর্তন করতে পারে, তাই ট্রেডিং সিগন্যাল বিশ্লেষণের সময় এটি অবশ্যই বিবেচনায় রাখতে হবে। যখন মূল্য আপনার পজিশনের অনুকূলে ১৫ পিপস অগ্রসর হয়, তখন ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করতে ভুলবেন না — কারণ এটি ভুল সিগন্যালের ক্ষেত্রে লোকসান থেকে সুরক্ষা দেবে।
মঙ্গলবার ইউরোজোনে কোনো গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট বা প্রতিবেদন নির্ধারিত নেই, শুধুমাত্র জার্মানির বেকারত্ব সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে — যেটিকে কিছুটা চেষ্টা করেও গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন হিসেবে বিবেচনা করা যায় না। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সন্ধ্যায় ফেডের মিনিটস বা কার্যবিবরণী প্রকাশিত হবে। দুটি ইভেন্টই গুরুত্বের দিক থেকে গৌণ, তাই আজ কারেকশন হিসেবে ডলারের মূল্য বৃদ্ধির প্রবণতা অব্যাহত থাকার জন্য তেমন কোনো জোরালো কারণ নেই।
চিত্রের ব্যাখা:
- মূল্যের সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল – গাঢ় লাল লাইন; যেখানে মূল্যের মুভমেন্ট থেমে যেতে পারে। তবে এগুলো সরাসরি ট্রেডিং সিগন্যাল নয়।
- কিজুন সেন ও সেনকৌ স্প্যান বি লাইন – শক্তিশালী ইচিমোকু ইন্ডিকেটরের লাইন, যা ৪-ঘণ্টা চার্ট থেকে ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে স্থানান্তর করা হয়েছে।
- এক্সট্রিম লেভেল – হালকা লাল লাইন; যেখানে পূর্বে মূল্য রিবাউন্ড করেছে। এগুলো ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে কাজ করতে পারে।
- হলুদ লাইন – ট্রেন্ড লাইন, ট্রেন্ড চ্যানেল এবং অন্যান্য টেকনিক্যাল প্যাটার্ন নির্দেশ করে।
- COT ইন্ডিকেটর 1 – চার্টে প্রতিটি গ্রুপের ট্রেডারদের নিট পজিশনের পরিমাণ প্রদর্শন করে।