জে ডেভিড ভ্যান্স

মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জে ডি ভ্যান্স হলেন ট্রাম্পের সম্ভাব্য উত্তরসূরিদের তালিকায় প্রথমদিকের নাম। একসময় ট্রাম্পের সমালোচনা করলেও এখন তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্টের দৃঢ় সমর্থকদের একজন। "আমেরিকা ফার্স্ট" নীতির ধারাবাহিকতায় তিনি অর্থনৈতিক খাতের সম্প্রসারণ এবং বৈদেশিক নীতিমালায় রক্ষণশীল ভূমিকার পক্ষে বেশ সোচ্চার। ট্রাম্প প্রকাশ্যে ভ্যান্সের প্রশংসা করলেও এখনো সরাসরিভাবে সমর্থন দেননি। ভ্যান্স নিজেও বলছেন, যদি তিনি ২০২৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন, তাহলে “স্বাভাবিক উত্তরসূরি” হিসেবে নয়, বরং নিজস্ব অবস্থান থেকেই অংশগ্রহণ করবেন।

মার্কো আন্তোনিও রুবিও

মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালনরত মার্কো রুবিও ট্রাম্প প্রশাসনের অন্যতম প্রভাবশালী ব্যক্তি এবং ২০২৮ সালের সম্ভাব্য প্রেসিডেন্ট প্রার্থী। তিনি মার্কিন ইতিহাসের দ্বিতীয় ব্যক্তি, যিনি একসঙ্গে সেক্রেটারি অব স্টেট এবং ন্যাশনাল সিকিউরিটি অ্যাডভাইজার পদে কাজ করছেন। তবে “মেক আমেরিকা গ্রেট অ্যাগেইন” সমর্থকদের মধ্যে কিছুটা অনিশ্চয়তা রয়েছে—কারণ রুবিওকে ট্রাম্পের ভাবধারার সঙ্গে সম্পূর্ণরূপে একমত বলে মনে করা হয় না। তাছাড়া, ট্রাম্পের সঙ্গে তার অতীতের রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতাও এখনো অনেকের স্মরণে রয়েছে।

ডোনাল্ড ট্রাম্প জুনিয়র

সম্প্রতি কাতারে এক বিজনেস সামিটে বক্তব্য দেওয়ার সময় ট্রাম্পের জ্যেষ্ঠ পুত্র ডোনাল্ড ট্রাম্প জুনিয়রের এক মন্তব্য আবারও ২০২৮ সালে নির্বাচনে তার অংশগ্রহণ নিয়ে জল্পনা উস্কে দেয়। “একটি আহ্বান” সংক্রান্ত মন্তব্যকে অনেকেই পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ইঙ্গিত হিসেবে বিবেচনা করেছেন, যদিও তিনি নিজেই দ্রুত সেই ব্যাখ্যাকে ‘মিডিয়ার অতিরঞ্জন’ বলে উড়িয়ে দেন। তবে, তিনি এটাও স্পষ্ট করে বলেন যে ভবিষ্যতে রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হওয়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না। যদি সত্যিই তিনি মাঠে নামেন, তাহলে তার সঙ্গে ভ্যান্সের রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা মূল নাটকীয় অধ্যায় হয়ে উঠতে পারে।

রন ডিওন ডেস্যান্টিস

২০২৪ সালের নির্বাচনী বিতর্কে ট্রাম্পের সঙ্গে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতার পর, এখন ফ্লোরিডার গভর্নর রন ডেস্যান্টিস আবার ট্রাম্পের সাথে একত্রে কাজ করছেন। বর্তমানে তিনি জোরালোভাবে ট্রাম্পের অভিবাসন নীতিমালার প্রচারণা চালাচ্ছেন। তবে ২০২৮ সালের সম্ভাব্য নির্বাচনী প্রচারণায় তার পথ খুব একটা মসৃণ নয়। বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যের আইনপ্রণেতাদের সঙ্গে তার সম্পর্ক এখনো বেশ নাজুক, আর তার স্ত্রীর দাতব্য উদ্যোগ নিয়ে বিতর্কও চলমান রয়েছে। তবুও, ডেস্যান্টিসকে এখনো একজন সম্ভাব্য প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিসেবেই দেখা হচ্ছে।

গ্লেন অ্যালেন ইয়ংকিন

ভার্জিনিয়ার গভর্নর গ্লেন ইয়ংকিন রিপাবলিকানদের মধ্যে অন্যতম বিরল ব্যক্তি যিনি ডেমোক্র্যাট-অধ্যুসিত অঙ্গরাজ্যে জয়লাভ করতে সক্ষম হয়েছেন। ২০২৪ সালে তিনি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দৌড়ে অংশ না নিয়ে ট্রাম্পের সঙ্গে সরাসরি সংঘাত এড়ান। তবে ২০২৮ সালের নির্বাচনী দৌড়ে এখনো তার অংশগ্রহণের সম্ভবনা রয়ে গেছে। অঙ্গরাজ্যভিত্তিক সংসদে ডেমোক্র্যাটদের সঙ্গে মতবিরোধ ও রক্ষণশীল এজেন্ডা এগিয়ে নিতে ব্যর্থ হলেও, তিনি একজন মধ্যপন্থী রাজনীতিবিদ এবং কার্যকর প্রশাসক হিসেবে পরিচিতি বজায় রেখেছেন।

ক্রিস্টি লিন নোম

দক্ষিণ ডাকোটার সাবেক গভর্নর এবং বর্তমান হোমল্যান্ড সিকিউরিটি সচিব ক্রিস্টি নোম ট্রাম্পের সবচেয়ে বিশ্বস্ত মিত্রদের একজন। তিনি ট্রাম্প প্রশাসনের অভিবাসন নীতির একজন দৃঢ় সমর্থক এবং বিদেশি শিক্ষার্থীদের ওপর বিধিনিষেধসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগের সাথে জড়িত রয়েছে। তবে শিকারে গিয়ে নিজের কুকুরকে গুলি করে মারার স্বীকারোক্তি তার ভাবমূর্তিকে কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। তবুও ট্রাম্প তাকে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে বহাল রেখেছেন, এবং ২০২৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তার অংশগ্রহণের সম্ভাবনা এখনো আলোচনার টেবিলে রয়েছে।

ব্রায়ান পোর্টার কেম্প

জর্জিয়ার গভর্নর ব্রায়ান কেম্প আবারও সম্প্রতি সিনেট আসনের নির্বাচনে অংশ নেয়ার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে আলোচনায় এসেছেন। বিশ্লেষকরা এটিকে ২০২৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশ নেয়ার জন্য তার উচ্চাকাঙ্ক্ষার ইঙ্গিত হিসেবে দেখছেন। যদিও অতীতে ট্রাম্পের সঙ্গে তার সম্পর্ক উত্তপ্ত ছিল, বর্তমানে তারা কিছুটা সমঝোতায় পৌঁছাতে পেরেছেন বলে মনে হচ্ছে। তবে ট্রাম্পের কার্যক্রমের প্রতি তার সতর্ক মনোভাব রিপাবলিকান ভোটারদের একটি বড় অংশের সমর্থন পেতে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে।