বুধবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ
GBP/USD পেয়ারের 1H চার্ট
বুধবার GBP/USD পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্ট অব্যাহত ছিল, যা মঙ্গলবার থেকে শুরু হয়েছিল। মনে করিয়ে দেওয়ার মতো বিষয় হলো—মঙ্গলবার ইসরায়েল ও ইরানের মধ্যে যুদ্ধবিরতির খবর আসে, যার ফলে মার্কিন ডলারের চাহিদা হঠাৎ কমে যায়। এখনো মার্কেটের কিছু বিনিয়োগকারীরা ডলারকে "নিরাপদ বিনিয়োগ" হিসেবে বিবেচনা করলেও এটি দরপতনের শিকার হয়। এ ছাড়া ৯ জুলাই তারিখে "নির্ধারিত একক শুল্কহার"-এর সময়সীমা শেষ হচ্ছে। ট্রাম্প প্রশাসন যুক্তরাজ্য ছাড়া এখনো অন্য কোনো দেশের সঙ্গে চুক্তিতে পৌঁছাতে পারেনি। অন্য কোনো দেশের সঙ্গে আলোচনার তথ্য গণমাধ্যমে কার্যত অনুপস্থিত, তাই মার্কেটের ট্রেডাররা সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত রয়েছে—অর্থাৎ শুল্ক পুনর্বহাল করা হতে পারে, যা আরও দ্রুত দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি ঘটাতে পারে এবং এমনিতেই দুর্বল হয়ে পড়া অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে আরও শ্লথ করতে পারে। কংগ্রেসে বক্তব্য দেওয়ার সময় জেরোম পাওয়েল নিশ্চিত করেন, তিনি আশা করছেন এই গ্রীষ্মে মূল্যস্ফীতি বাড়বে, এবং মুদ্রানীতি এখন মূল আলোচনা থেকে সরে গেছে।
GBP/USD পেয়ারের 5M চার্ট
৫ মিনিটের টাইমফ্রেমে, বুধবার বেশ কয়েকটি ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হয়। 1.3580–1.3592 এরিয়ার কাছাকাছি প্রথম বাই সিগন্যালটি অত্যন্ত লাভজনক ছিল, কারণ এখান থেকেই পাউন্ডের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্ট শুরু হয়। রাতের শেষভাগে মূল্য 1.3643–1.3652 এরিয়া অতিক্রম করে, এবং বৃহস্পতিবার সকালে তা 1.3695 লেভেলে পৌঁছে যায়। ফলে, নতুন ট্রেডাররা প্রায় যেকোনো পয়েন্টে লং পজিশন ক্লোজ করে লাভ করতে পারত।
বৃহস্পতিবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল:
ঘন্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে GBP/USD পেয়ারের মূল্যের মুভমেন্ট এখনো কেবলমাত্র ট্রাম্পের কর্মকাণ্ডের দ্বারা প্রভাবিত হচ্ছে এবং তার গৃহীত নীতিমালার ব্যাপারে ট্রেডারদের মধ্যে অনিশ্চয়তা বিরাজ করছে। এর ফলে মার্কেটের ট্রেডাররা এখনো ডলার বিক্রি করছে বা আরও নেতিবাচক পরিস্থিতির জন্য অপেক্ষা করছে যাতে করে ডলার বিক্রির যৌক্তিকতা তৈরি হয়। যতক্ষণ না মার্কেটের ট্রেডাররা বাণিজ্যযুদ্ধ শেষ হওয়ার সত্যিকারের কোনো ইঙ্গিত পায় এবং ট্রাম্প এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া বন্ধ না করেন যা তার ক্ষমতার বাইরে এবং যা বিনিয়োগকারীদের আতঙ্কিত করে তোলে ততক্ষণ সম্ভবত এই পরিস্থিতি চলতেই থাকবে। প্রত্যাশিতভাবেই 1.3643 লেভেল কোনো উল্লেখযোগ্য রেজিস্ট্যান্স তৈরি হয়নি—এই পেয়ারের মূল্য কিছুক্ষণ এই লেভেলের আশপাশে ছিল এবং তারপর তা সহজেই অতিক্রম করে যায়।
বৃহস্পতিবার GBP/USD পেয়ারের মূল্য আরও বৃদ্ধি পেতে পারে, কারণ মার্কেটে সম্ভবত একটি নতুন ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা গড়ে উঠছে। মাঝে মাঝে ডলারের মূল্যের কারেকশন ঘটলেও, বর্তমান প্রবণতা বেশ স্থিতিশীল এবং যথেষ্ট ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়ে আছে।
৫ মিনিটের টাইমফ্রেমে নিম্নলিখিত লেভেলগুলোতে ট্রেডিং করা যেতে পারে 1.3203–1.3211, 1.3259, 1.3329–1.3331, 1.3413–1.3421, 1.3518–1.3535, 1.3580–1.3592, 1.3643–1.3652, 1.3695, 1.3747, 1.3814–1.3833। বৃহস্পতিবার ব্যাংক অফ ইংল্যান্ডের গভর্নর অ্যান্ড্রু বেইলি বক্তৃতা দেবেন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে জিডিপি ও ডিউরেবল গুডস অর্ডার সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে। এগুলো গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট হলেও, আমরা আশা করছি না যে এগুলো ট্রেডারদের সেন্টিমেন্ট বা মার্কেটের সামগ্রিক প্রবণতাকে উল্লেখযোগ্যভাবে প্রভাবিত করবে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
- সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
- ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
- ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
- ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
- MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
- নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
- স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।
চার্টের মূল উপাদান:
সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে কাজ করে এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।
লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।