সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদনের বিশ্লেষণ:
সোমবারে কোনো সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদনের প্রকাশনা নির্ধারিত নেই। সুতরাং, যদি না ডোনাল্ড ট্রাম্প নতুন করে কোনো গুরুত্বপূর্ণ বিবৃতি বা সিদ্ধান্ত ঘোষণা, তাহলে সোমবার স্বল্প মাত্রার অস্থিরতা এবং ফ্ল্যাট রেঞ্জে মূল্যের অবস্থান করার প্রবণতা পরিলক্ষিত হতে পারে। এই বিশ্লেষণ ইউরোর জন্য বেশি প্রযোজ্য, কারণ গত দুই দিনে ব্রিটিশ পাউন্ডের মূল্য তুলনামূলকভাবে শক্তিশালী নিম্নমুখী মুভমেন্ট প্রদর্শন করেছে।
ফান্ডামেন্টাল ইভেন্টের বিশ্লেষণ:
সোমবারের ফান্ডামেন্টাল ইভেন্টের বিষয়ে বলতে গেলে, আবারও বলতেই হচ্ছে — আজও উল্লেখযোগ্য কিছুই নেই। আমরা আগেও উল্লেখ করেছি, বর্তমানে যেকোনো কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুদ্রানীতির বিষয়টি গুরুত্ব হারিয়েছে — প্রথমত, কারণ কেবলমাত্র ডলারই স্পষ্টভাবে দরপতনের শিকার হচ্ছে, এবং দ্বিতীয়ত, কেন্দ্রীয় ব্যাংকগুলোর অবস্থান ইতোমধ্যে পরিপূর্ণভাবে স্পষ্ট এবং ট্রেডাররা সে সম্পর্কে সবকিছুই জানে। গৃহীত অবস্থানের কোনো উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন বা নতুন নীতিগত পরিকল্পনার ইঙ্গিত নেই, তাই এখন কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রতিনিধিদের ভাষণগুলোরও তেমন কোনো গুরুত্ব নেই।
এখনো বাণিজ্যযুদ্ধই বিনিয়োগকারীদের জন্য প্রধান উদ্বেগের বিষয় হিসেবে রয়ে গেছে। এবং আমরা এখনো এই যুদ্ধের সমাপ্তির কোনো লক্ষণ দেখতে পাচ্ছি না। কেউ কেউ মনে করতে পারেন যে বাণিজ্য চুক্তিগুলো সত্যিই স্বাক্ষরিত হচ্ছে, তবে আমরা লক্ষ্য করছি যে, চুক্তি স্বাক্ষরিত হলেও যুক্তরাষ্ট্র ও এর বাণিজ্য অংশীদারদের মধ্যে পরবর্তী সহযোগিতার শর্তগুলো পূর্বের তুলনায় আরও নেতিবাচক হয়ে উঠছে।
এই বিষয়টি ডলারের ক্ষেত্রে আরও দীর্ঘ সময় ধরে প্রাসঙ্গিক থাকতে পারে। পরিস্থিতি এখনো জটিল, কারণ চার মাসের বেশি সময় ধরে চলমান আলোচনার পর ট্রাম্প মাত্র চারটি বাণিজ্য চুক্তিতে পৌঁছাতে পেরেছেন — যার মধ্যে একটি চুক্তি নিয়ে যথেষ্ট প্রশ্ন রয়েছে। সর্বশেষ তিন সপ্তাহে, মার্কিন প্রেসিডেন্ট আবারও সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যে যারা ওয়াশিংটনের সঙ্গে চুক্তি করতে অস্বীকৃতি জানাবে, তাদের ওপর শুল্ক বাড়ানো হবে; পাশাপাশি তামা, ফার্মাসিউটিক্যাল এবং সেমিকন্ডাক্টর আমদানির ওপরও শুল্ক বৃদ্ধি করা হয়েছে। তদ্ব্যতীত, তিনি জানিয়েছেন যে বিশ্বের প্রায় সব দেশকে মার্কিন বাজেটে শুল্ক প্রদান করতে হবে। সত্যি বলতে, এই পরিস্থিতিতে "বাণিজ্যযুদ্ধের প্রশমন" শব্দটির কোনো প্রতিফলন আমরা দেখতে পাচ্ছি না।
উপসংহার:
এ সপ্তাহের প্রথম দিনের ট্রেডিংয়ে উভয় কারেন্সি পেয়ারের মূল্য সাইডওয়েজ মুভমেন্ট প্রদর্শন করতে পারে। কারণ আজ কোনো উল্লেখযোগ্য ইভেন্ট নির্ধারিত নেই, তাই শক্তিশালী মুভমেন্টের প্রত্যাশা করাও বাস্তবসম্মত নয়। শুধুমাত্র টেকনিক্যাল লেভেলের ওপর ভিত্তি করে ট্রেডিং করা হবে। ব্রিটিশ পাউন্ডের ক্ষেত্রে বর্তমানে 1.3413–1.3421 এরিয়ায় একটি শক্তিশালী সাপোর্ট জোন রয়েছে, আর ইউরোর ক্ষেত্রে 1.1740–1.1745 লেভেলে একটি সুপ্রতিষ্ঠিত সাপোর্ট এরিয়া রয়েছে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
- সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
- ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
- ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
- ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
- MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
- নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
- স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।
চার্টে কী কী আছে:
সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে কাজ করে এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।
লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।