সোমবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ
EUR/USD পেয়ারের 1H চার্ট
সোমবার, আনুষ্ঠানিকভাবে EUR/USD কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী মুভমেন্ট অব্যাহত ছিল, কিন্তু বাস্তবে টানা দ্বিতীয় দিনের মতো স্বল্প মাত্রার অস্থিরতার মধ্যে সাইডওয়েজ ট্রেডিং পরিলক্ষিত হয়েছে। 1.1666 লেভেলটি এখনও ব্রেক করা হয়নি। সম্ভাবনা রয়েছে যে আজ কোনো উপযুক্ত মৌলিক বা সামষ্টিক অর্থনৈতিক পটভূমির মধ্যে দিয়ে অবশেষে এই লেভেলটি ব্রেক করা হতে পারে। মার্কিন মুদ্রাস্ফীতি প্রতিবেদন একটি গুরুত্বপূর্ণ সামষ্টিক প্রতিবেদন এবং এটি ডলারের মূল্যের 50 পয়েন্ট পর্যন্ত বৃদ্ধির কারণ হতে পারে। তবে, গত দুই সপ্তাহের এই পেয়ারটির মূল্যের মুভমেন্ট থেকে বোঝা যাচ্ছে যে আমরা একটি সাধারণ করেকশন দেখছি। একইসাথে, মনে করিয়ে দেওয়া দরকার যে গত সপ্তাহ এবং এই সপ্তাহে, ডোনাল্ড ট্রাম্প সক্রিয়ভাবে নতুন বাণিজ্য শুল্ক আরোপ ও বৃদ্ধি করছেন। সুতরাং, মার্কিন ডলারের কাছে তেমন কোনো বাস্তব মৌলিক সহায়ক নেই। আমাদের বিশ্বাস, 2025 সালের জানুয়ারিতে শুরু হওয়া ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা সম্ভবত অব্যাহত থাকবে।
EUR/USD পেয়ারের 5M চার্ট
5-মিনিটের টাইমফ্রেমে সোমবার কেবল একটি ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হয়েছিল। ইউরোপীয় সেশনের শুরুতে, এই পেয়ারের মূল্য 1.1666 লেভেল থেকে রিবাউন্ড করেছিল যা খুব একটা নিখুঁত ছিল না, যা দিনের শেষে 1.1655 দ্বারা পরিপূরক হয়েছিল। স্বল্প মাত্রার অস্থিরতার কারণে, এরপর এই পেয়ারের মূল্য প্রায় 20 পয়েন্ট বৃদ্ধি পেয়েছিল। এটি কিছু না পাওয়ার থেকে ভালো, কিন্তু বর্তমানে অস্থিরতার মাত্রা এতটাই কম যে উল্লেখযোগ্য মুনাফার আশা করা কঠিন।
মঙ্গলবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল:
ঘন্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে এখনও EUR/USD পেয়ারের মূল্যের কারেকশন চলমান রয়েছে, তবে গত পাঁচ মাস ধরে যে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা সক্রিয় রয়েছে, তা এখনো অটুট রয়েছে। ডোনাল্ড ট্রাম্প এখনো যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট মূলত এই কারণেই মার্কিন ডলারের দরপতন চলমান রয়েছে। মাঝে মাঝে ডলারের মূল্যের (অন্যান্য কারেন্সি বা ইনস্ট্রুমেন্টের মতো) কারেকশন হয় (যা এখন দেখা যাচ্ছে), কিন্তু সামগ্রিক মৌলিক পটভূমি অনুযায়ী মধ্যমেয়াদে ধারাবাহিকভাবে ডলারের দর বৃদ্ধির সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। এই পেয়ারের মূল্য ট্রেন্ডলাইন ব্রেক করলে সেটি ঘন্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে বর্তমান নিম্নমুখী মুভমেন্টের সমাপ্তির সংকেত দেবে।
মঙ্গলবার, EUR/USD পেয়ারের মূল্য আবারও শক্তিশালীভাবে 1.1666 এর লেভেল ব্রেক করার চেষ্টা করতে পারে, কিন্তু আগের পাঁচটি রিবাউন্ড থেকে বোঝা যায় যে এই লেভেলটি ভালোভাবে প্রতিরক্ষিত। 1.1666 এর নিচে কনসোলিডেশন হলে সেটি স্থানীয় পর্যায়ে নিম্নমুখী প্রবণতা অব্যাহত থাকার সংকেত দেবে, অন্যদিকে ট্রেন্ডলাইন ব্রেক করে গেলে এই প্রবণতা শেষ হওয়ার ইঙ্গিত পাওয়া যাবে।
5-মিনিট টাইমফ্রেমে, নিম্নলিখিত লেভেলগুলোর প্রতি নজর দেওয়া উচিত: 1.1198–1.1218, 1.1267–1.1292, 1.1354–1.1363, 1.1413, 1.1455–1.1474, 1.1527, 1.1561–1.1571, 1.1609, 1.1655–1.1666, 1.1740–1.1745, 1.1808, 1.1851, 1.1908।
মঙ্গলবার, ইউরোজোনের শিল্প উৎপাদন এবং মার্কিন মুদ্রাস্ফীতি প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে। এই দুটি প্রতিবেদনের ফলাফল মার্কেটে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে, তাই প্রতিবেদন প্রকাশের সময় তীব্র রিভার্সাল বা অস্থিরতার মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
- সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
- ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
- ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
- ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
- MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
- নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
- স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।
চার্টের মূল উপাদান:
সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে ব্যবহৃত হয় এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।
লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।