শুক্রবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ
GBP/USD পেয়ারের 1H চার্ট
শুক্রবার GBP/USD পেয়ারের মূল্য তুলনামূলকভাবে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে নিম্নমুখী হয়েছে। কেন ব্রিটিশ পাউন্ডের আবার দরপতন হচ্ছে, অথচ যখন ইউরোর মূল্য স্থির ছিল? আমরা ইউরো ও পাউন্ডের মূল্যের মধ্যে প্রায়শই সাদৃশ্যপূর্ণ মুভমেন্ট দেখে অভ্যস্ত। তবে শুক্রবার যুক্তরাজ্যে মাসিক জিডিপি ও শিল্প উৎপাদন সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে। পূর্বে যেমনটি বলা হয়েছিল, এই প্রতিবেদনগুলোর ফলাফল খুব বেশি গুরুত্বপূর্ণ নয় এবং সম্ভবত এই পেয়ারের দরপতনের সরাসরি কারণও এগুলো নয়।
তবুও, এই প্রতিবেদনগুলোর ফলাফল সম্ভবত সামগ্রিকভাবে বাজার পরিস্থিতিকে প্রভাবিত করেছে, কারণ উভয় সূচকের ফলাফলই দুর্বল ছিল। তাই, এইভাবে বলা যায়, শুক্রবার পাউন্ড ইউরোর তুলনায় দরপতনের ক্ষেত্রে বেশি সংবেদনশীল ছিল। তদুপরি, 1.1666 লেভেলে ইউরোর মূল্যের শক্তিশালী সাপোর্ট থাকলেও, পাউন্ডের ক্ষেত্রে এমন কোনো সমতুল্য সাপোর্ট লেভেল নেই। ডাউনওয়ার্ড ট্রেন্ডলাইন এখনো স্থানীয় পর্যায়ে বিয়ারিশ প্রবণতা নির্দেশ করে, তাই টেকনিক্যাল দৃষ্টিকোণ থেকে এই ধরনের মুভমেন্ট পুরোপুরি যৌক্তিক।
GBP/USD পেয়ারের 5M চার্ট
৫-মিনিট টাইমফ্রেমে শুক্রবার একাধিক ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হয়েছে। যেহেতু সকালে প্রকাশিত যুক্তরাজ্যের সামষ্টিক প্রতিবেদনের ফলাফল পাউন্ডের জন্য নেতিবাচক ছিল, তাই বাই সিগন্যালগুলো গুরুত্ব পাওয়ার মতো ছিল না। নতুন ট্রেডাররা হয়তো এসব সিগন্যাল নিয়ে কাজ করার চেষ্টা করেছে, কিন্তু 1.3518–1.3535 এরিয়া থেকে দুটি বাউন্সই শেষ পর্যন্ত ভুল প্রমাণিত হয়েছে। তবে এই এরিয়ার নিচে এই পেয়ারের মূল্য কনসোলিডেট করার ফলে আরও আকর্ষণীয় শর্ট পজিশন ওপেন করা সম্ভব হয়েছে।
সোমবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল:
ঘন্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে গত সপ্তাহে GBP/USD পেয়ার ব্যাপকভাবে দরপতনের শিকার হয়েছে, কিন্তু ডলারের মূল্যের "ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার" এখানেই সমাপ্তি ঘটেছে। গত ৭ দিনে মার্কিন ডলার শক্তিশালী হয়েছে, তবে তা খুব সামান্য পরিমাণে। আমাদের ধারণা, এই পেয়ারের মূল্যের বর্তমান নিম্নমুখী মুভমেন্ট সম্পূর্ণভাবে একটি টেকনিক্যাল কারেকশন। এর মানে এই নয় যে এই কারেকশন দুর্বল হবে — বরং, এটি দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে এবং এই সময়ের মধ্যে স্থানীয় পর্যায়ে একাধিকবার প্রবণতা পরিবর্তিত হতে পারে। তবে তা কেবল তখনই ঘটত যদি ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রায় প্রতিদিন নতুন করে শুল্ক আরোপ না করতেন। আমরা আশা করছি, এই পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্ট পুনরায় শুরু হবে, এবং মূল্যের ডাউনওয়ার্ড ট্রেন্ডলাইন ব্রেক করার মাধ্যমে সেটির টেকনিক্যাল প্রেক্ষাপট নিশ্চিত হবে।
সোমবার আবারও GBP/USD পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা দেখা যেতে পারে, কারণ বিয়ারিশ প্রবণতা এখনো সক্রিয় রয়েছে। মূল্য ট্রেন্ডলাইন ব্রেক করলে এই কারেকশন শেষ হওয়ার সিগন্যাল পাওয়া যাবে।
৫-মিনিট টাইমফ্রেমে বর্তমানে ট্রেডিংয়ের জন্য প্রাসঙ্গিক লেভেলগুলো হলো: 1.3203–1.3211, 1.3259, 1.3329–1.3331, 1.3413–1.3421, 1.3518–1.3532, 1.3574–1.3590, 1.3643–1.3652, 1.3682, 1.3763, 1.3814–1.3832।
সোমবার যুক্তরাজ্য কিংবা যুক্তরাষ্ট্রে কোনো গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট বা প্রতিবেদন নির্ধারিত নেই, তাই অস্থিরতার মাত্রা কম থাকার সম্ভাবনা রয়েছে এবং পুরো দিনজুড়েই এই পেয়ারের মূল্য ফ্ল্যাট রেঞ্জে থাকতে পারে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
- সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
- ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
- ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
- ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
- MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
- নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
- স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।
চার্টের মূল উপাদান:
সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে কাজ করে এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।
লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।