শুক্রবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ
EUR/USD পেয়ারের 1H চার্ট
শুক্রবার চলমান প্রবণতার সাথে সঙ্গতি রেখে EUR/USD পেয়ারের মূল্যের মৃদু নিম্নমুখী মুভমেন্ট অব্যাহত ছিল। পুরো সপ্তাহজুড়েই একই কথা বলা হয়েছে, কারণ মার্কেটে বাস্তবিকভাবে পরিস্থিতির কোনো পরিবর্তন ঘটেনি। প্রতিদিনই এই পেয়ারের মূল্য ধীরে ধীরে নিম্নমুখী হয়েছে, যখন এর পেছনে কোনো শক্তিশালী মৌলিক প্রেক্ষাপট ছিল না, এবং মৌলিক পরিস্থিতি — বিশেষ করে বৈশ্বিক বাণিজ্যযুদ্ধের বিষয়টি — ট্রেডারদের ডলার ক্রয় থেকে বিরত রেখেছে। প্রকৃতপক্ষে, এই মুহূর্তে কেউই ডলার কিনছে না। গত দুই সপ্তাহ ধরে EUR/USD পেয়ারের মূল্যের কারেকশন হয়েছে, কিন্তু এই সময়ের মধ্যে এই পেয়ারের মোট প্রায় 150 পয়েন্ট দরপতন হয়েছে, যা দিয়ে "ডলারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা" বলার মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি করেনি। তদুপরি, তথাকথিত "ডেভিল'স লেভেল" এখনো ব্রেক করা হয়নি, এবং ডলারের শক্তিশালী হওয়ার কোনো যৌক্তিক ভিত্তিও নেই। এমনকি গত সপ্তাহজুড়েও ডলার প্রতিদিনই দরপতনের মুখে পড়তে পারত। তবে টেকনিক্যাল বিশ্লেষণ মৌলিক বিশ্লেষণের চেয়ে বেশি কার্যকর ছিল, কারণ বর্তমান পরিস্থিতিতে প্রতিনিয়ত ডলারের দরপতন ঘটতে পারে না।
EUR/USD পেয়ারের 5M চার্ট
৫-মিনিটের টাইমফ্রেমে শুক্রবার প্রায় পুরো দিনই এই পেয়ারের মূল্য ফ্ল্যাট রেঞ্জে ছিল, দৈনিক অস্থিরতার পরিমাণ ছিল মাত্র 49 পয়েন্ট। কার্যত, একমাত্র ট্রেডিং সিগন্যাল রাতের বেলা গঠিত হয়, যখন এই পেয়ারের মূল্য আবার 1.1666 লেভেল থেকে বাউন্স করে। এরপরে, মূল্য প্রায় 40–50 পয়েন্ট পর্যন্ত বেড়ে যায়, এবং আর কোনো ট্রেডিং সিগন্যাল তৈরি হয়নি। সুতরাং, ইউরোপীয় সেশনের শুরুতে নতুন ট্রেডাররা একটি লং পজিশন ওপেন করতে পারত এবং মার্কিন সেশনের যেকোনো সময় তা ক্লোজ করতে পারত। যেকোনো অবস্থায়, এই ট্রেডটি লাভজনক হতো।
সোমবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল:
ঘন্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে EUR/USD পেয়ারের মূল্যের কারেকশন চলমান রয়েছে, তবে গত পাঁচ মাস ধরে যে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা সক্রিয় রয়েছে, তা এখনো অটুট রয়েছে। ডোনাল্ড ট্রাম্প এখনও মার্কিন প্রেসিডেন্ট — এই একটি কারণই ডলারকে চাপের মধ্যে রাখার জন্য যথেষ্ট। ডলার (অথবা যেকোনো কারেন্সি বা ইনস্ট্রুমেন্ট)-এর মূল্যের মাঝে মাঝে কারেকশন হওয়া স্বাভাবিক, এবং এখন আমরা ঠিক সেটাই দেখছি। তবে সামগ্রিক মৌলিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় ডলারের মূল্যের শক্তিশালী কোনো ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা আশা করা এখনো অত্যন্ত কঠিন। এই পেয়ারের মূল্য ট্রেন্ডলাইন ব্রেক করলে কারেকশন শেষ হওয়ার সিগন্যাল পাওয়া যাবে।
সোমবার EUR/USD পেয়ারের মূল্য আবারও তুলনামূলকভাবে শক্তিশালী 1.1666 লেভেল ব্রেক করার চেষ্টা করতে পারে, তবে আগের দুটি বাউন্স নির্দেশ করে যে এই পেয়ারের মূল্য অন্তত ট্রেন্ডলাইনের দিকে উঠতে পারে। এই পেয়ারের মূল্য 1.1666 লেভেল দৃঢ়ভাবে ব্রেক করে নিচের দিকে গেলে স্থানীয় নিম্নমুখী প্রবণতা অব্যাহত থাকবে।
৫-মিনিট চার্টে গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণযোগ্য লেভেলগুলো হলো: 1.1198–1.1218, 1.1267–1.1292, 1.1354–1.1363, 1.1413, 1.1455–1.1474, 1.1527, 1.1561–1.1571, 1.1609, 1.1666, 1.1740–1.1745, 1.1808, 1.1851, 1.1908।
সোমবার ইউরোজোন কিংবা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আবারও কোনো গুরুত্বপূর্ণ বা আগ্রহজনক ইভেন্ট নির্ধারিত নেই। এটি হবে পরপর ষষ্ঠ দিন যেখানে কোনো গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট নেই। ফলে, আজকের দিনেও ট্রেডারদের সমস্ত মনোযোগ থাকবে ট্রাম্পের দিকেই। গত সপ্তাহে মার্কেটের বিনিয়োগকারীরা ট্রাম্পের নতুন শুল্ক সংক্রান্ত ঘোষণাকে পুরোপুরি উপেক্ষা করেছে, যা এই পেয়ারের মূল্যকে 1.1666 লেভেল ব্রেক করিয়ে উপরের দিকে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে মার্কেটের ট্রেডারদের সক্ষমতা নিয়ে গুরুতর সন্দেহ সৃষ্টি করে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
- সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
- ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
- ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
- ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
- MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
- নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
- স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।
চার্টের মূল উপাদান:
সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে ব্যবহৃত হয় এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।
লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।