মঙ্গলবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ:
EUR/USD পেয়ারের 1H চার্ট

মঙ্গলবার, চলমান প্রবণতার সাথে সামঞ্জস্য রেখে EUR/USD কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের সামান্য নিম্নমুখী মুভমেন্ট অব্যাহত ছিল। এই পেয়ারের মূল্যের তুলনামূলকভাবে শক্তিশালী ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্টের পর, মার্কেটে একটি কারেকশন শুরু হয়েছে। বর্তমান দরপতনের ধরন পুরোপুরি একটি টেকনিক্যাল কারেকশনের বৈশিষ্ট্যের সঙ্গে মিলে যায়। এই পরিস্থিতিতে, আমরা মাঝারি মাত্রার টেকনিক্যাল কারেকশনের অংশ হিসেবে মার্কিন ডলারেরদর বৃদ্ধির আশা করছি, যার পরে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা আবার শুরু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বর্তমানে একটি ডাউনওয়ার্ড ট্রেন্ডলাইন গঠিত হয়েছে, যা নতুন ট্রেডারদের জন্য এই কারেকশনের সমাপ্তির সংকেত পেতে সাহায্য করতে পারে। এছাড়াও উল্লেখযোগ্য যে গত সপ্তাহে ডলারের দর বৃদ্ধির বৈধ কারণ ছিল, কিন্তু ট্রেডাররা সেগুলো উপেক্ষা করেছে। বিপরীতে, এই সপ্তাহে ডলারের ওপর একাধিক নেতিবাচক চাপ থাকলেও এটি শক্তিশালী হচ্ছে—যা আমাদেরকে এই সিদ্ধান্তে পৌঁছাতে বাধ্য করছে যে বর্তমান মুভমেন্ট মূলত টেকনিক্যাল কারণে হচ্ছে। মনে করিয়ে দিই যে এই সপ্তাহে ডোনাল্ড ট্রাম্প বেশ কয়েকটি দেশের ওপর শুল্ক বাড়িয়েছেন, তবে সপ্তাহের প্রথম তিনটি দিনের ট্রেডিংয়ের কার্যত কোনো গুরুত্বপূর্ণ সামষ্টিক অর্থনৈতিক পটভূমি ছিল না।
EUR/USD পেয়ারের 5M চার্ট
মঙ্গলবার ৫ মিনিটের টাইমফ্রেমে দুটি ট্রেড সিগন্যাল গঠিত হয়েছে। প্রথমে এই পেয়ারের মূল্য 1.1740–1.1745-এর লেভেল ব্রেক করে ঊর্ধ্বমুখী হয়, কিন্তু এই বাই সিগন্যালটি ভুল বলে প্রমাণিত হয়। দুর্ভাগ্যবশত, মূল্য প্রত্যাশিত দিকে ১৫ পয়েন্ট পর্যন্তও অগ্রসর হতে পারেনি। তবে পরবর্তী সেল সিগন্যালটি কার্যকর ছিল এবং এই সিগন্যাল গঠনের পর এই পেয়ারের মূল্য প্রায় ৫০ পয়েন্ট কমে যায়। নতুন ট্রেডাররা সহজেই এই ট্রেড থেকে ২০–৩০ পয়েন্ট মুনাফা করতে পারতেন। সেল পজিশন যেকোনো সময় ক্লোজ করা যেত।
বুধবার কীভাবে ট্রেড করতে হবে:
ঘন্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে EUR/USD পেয়ারের মূল্যের কারেকশন শুরু হয়েছে, তবে গত পাঁচ মাসব্যাপী চলমান মূল্য ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা এখনো অটুট রয়েছে। ডোনাল্ড ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট—এখনো এই তথ্যটিই ডলারের নিয়মিত দরপতনের জন্য যথেষ্ট। অবশ্যই মাঝেমধ্যে ডলারের মূল্যের কারেকশন হবে—যেমনটি এখন হচ্ছে—তবে বর্তমান মৌলিক প্রেক্ষাপটে মার্কিন কারেন্সির মূল্যের বড় ধরনের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার প্রত্যাশা করার খুব একটা ভিত্তি নেই। এই সপ্তাহে এই পেয়ারের মূল্য ধীরগতিতে কমতে পারে, তবে মূল্য ডাউনওয়ার্ড ট্রেন্ডলাইন ব্রেক করে উপরে উঠে গেলে এটি একটি নতুন ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্টের সংকেত হিসেবে বিবেচিত হবে।
বুধবার, EUR/USD পেয়ারের মূল্যের ধীরগতির ও পর্যায়ক্রমিক নিম্নমুখী মুভমেন্ট অব্যাহত থাকতে পারে। সপ্তাহের তৃতীয় দিনের ট্রেডিংয়ে কোনো বড় ইভেন্ট নির্ধারিত নেই, তাই টেকনিক্যাল কারেকশন চলতে পারে।
৫ মিনিটের চার্টে প্রাসঙ্গিক পর্যবেক্ষণযোগ্য লেভেলগুলো হলো: 1.1198–1.1218, 1.1267–1.1292, 1.1354–1.1363, 1.1413, 1.1455–1.1474, 1.1527, 1.1561–1.1571, 1.1609, 1.1666, 1.1740–1.1745, 1.1808, 1.1851, 1.1908।
বুধবার ইউরোপীয় ইউনিয়ন বা যুক্তরাষ্ট্রে কোনো সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদনের প্রকাশনা বা বক্তৃতা নির্ধারিত নেই। ডোনাল্ড ট্রাম্প কালো তালিকাভুক্ত কয়েকটি দেশের ওপর নতুন করে শুল্ক আরোপের ঘোষণা দিয়েছেন, তবে ট্রেডাররা এখনো বাণিজ্যযুদ্ধের এই নতুন উত্তেজনার খবরের প্রতি কোনো প্রতিক্রিয়া প্রদর্শন করেনি।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
- সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
- ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
- ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
- ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
- MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
- নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
- স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।
চার্টের মূল উপাদান:
- সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে ব্যবহৃত হয় এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।
- লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
- MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
- গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
নতুন ট্রেডারদের জন্য টিপস:
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।