বৃহস্পতিবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ
GBP/USD পেয়ারের 1H চার্ট
বৃহস্পতিবার, আবারও হঠাৎ করে GBP/USD পেয়ারের দরপতন ঘটে, তবে এইবার ব্রিটিশ কারেন্সির দরপতন মাত্র পাঁচ মিনিট স্থায়ী হয়। বৃহস্পতিবার মার্কিন ডলারের মূল্যের যে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা গেছে, তা গুরুত্বপূর্ণ মৌলিক কারণে ঘটেছে। তবুও, বৃহস্পতিবার দিনের শেষে ডলারের দর একটি পয়েন্টও বাড়েনি।
স্মরণ করিয়ে দেয়া যাক যে, বুধবার অনেক বিশ্লেষক মনে করেছিলেন ব্রিটিশ কারেন্সির 200 পিপস দরপতনের কারণ হলো যুক্তরাজ্যের চ্যান্সেলর র্যাচেল রিভস পার্লামেন্টে বিতর্কের সময় কান্নায় ভেঙে পড়েন। অনেকেই সেই কান্নাকে সরকারের প্রতি সমালোচনার প্রতিক্রিয়া ও ট্রেজারি প্রধানের সম্ভাব্য পদত্যাগের ইঙ্গিত হিসেবে দেখেছিলেন। তবে প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমার দ্রুত সকল উদ্বেগ দূর করে বলেন, তিনি রিভসের প্রতি পূর্ণ আস্থা প্রদর্শন করেন এবং তাঁর কাজকে অত্যন্ত ইতিবাচকভাবে মূল্যায়ন করেন।
এদিকে, বৃহস্পতিবার তিনটি গুরুত্বপূর্ণ মার্কিন অর্থনৈতিক প্রতিবেদন শক্তিশালী ফলাফল দেখানোর পরও এবং ডলারের মূল্য প্রাথমিকভাবে ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার পর, দিনের শেষে তা আবারও দর হারায় — তাও আবার কোনো সুস্পষ্ট কারণ ছাড়াই। আবারও আমরা বলতে পারি যে, মার্কেটের ট্রেডাররা কোনো পরিস্থিতিতেই ডলার কিনতে চাইছে না, এবং প্রতিটি কারেকশনকে পাউন্ড কেনার সুযোগ হিসেবে ব্যবহার করছে।
GBP/USD পেয়ারের 5M চার্ট
৫-মিনিটের টাইমফ্রেমে, বৃহস্পতিবার বেশিরভাগ সময় 1.3643–1.3682 রেঞ্জের মধ্যেই এই পেয়ারের ট্রেডিং করা হয়েছে, যা একটি ফ্ল্যাট মুভমেন্ট নির্দেশ করে। একটি ট্রেডিং সিগন্যাল সত্যিকার অর্থে কার্যকর ছিল — তা হলো 1.3580–1.3592 জোন থেকে একটি বাউন্স। এই বাউন্সের পর, মূল্য আবার ফ্ল্যাট রেঞ্জে ফিরে আসে, যেখানে লং পজিশনের প্রফিট লক করে নেয়া যুক্তিযুক্ত ছিল।
শুক্রবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল:
ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে GBP/USD পেয়ারের তীব্র দরপতন দেখা গেলেও আমরা মনে করি না যে এটি "ডলারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার" সূচনা নির্দেশ করে। মার্কেটের বিনিয়োগকারীরা এখনো ডলার বিক্রি করছে কিংবা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে নতুন কোনো নেতিবাচক খবরের জন্য অপেক্ষা করছে যাতে আবারও ডলার বিক্রি করা যায়। যতক্ষণ না মার্কেটের ট্রেডাররা বাণিজ্যযুদ্ধ শেষ হওয়ার দৃশ্যমান কোনো সংকেত পায় এবং ট্রাম্প এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া বন্ধ না করেন যা নেয়ার তাঁর কোনো আইনগত ক্ষমতা নেই এবং যা মার্কেটের ট্রেডারদের হতবাক করে ফেলে ততক্ষণ এই প্রবণতা চলমান থাকবে।
শুক্রবার, স্বল্প মাত্রার অস্থিরতার সাথে GBP/USD পেয়ারের ট্রেডিং করা হতে পারে, কারণ আজ যুক্তরাষ্ট্রে সরকারি ছুটির দিন পালিত হচ্ছে। H1 চার্টে একটি নতুন অ্যাসেন্ডিং ট্রেন্ডলাইন তৈরি হয়েছে, যা আবারও পাউন্ডের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা সৃষ্টি করতে সহায়তা করছে।
৫-মিনিটের টাইমফ্রেমে ট্রেডিংয়ের জন্য বিবেচ্য লেভেলগুলো হলো: 1.3203–1.3211, 1.3259, 1.3329–1.3331, 1.3413–1.3421, 1.3518–1.3535, 1.3580–1.3592, 1.3643–1.3652, 1.3682, 1.3763, 1.3814–1.3832। শুক্রবার যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্র — উভয় দেশেই — কোনো উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক ইভেন্ট বা প্রতিবেদনের প্রকাশনা নির্ধারিত নেই, ফলে দিনের বাকি সময়ে মার্কেটে উল্লেখযোগ্য মুভমেন্ট সৃষ্টি হওয়ার খুব বেশি সম্ভাবনা নেই।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
- সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
- ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
- ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
- ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
- MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
- নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
- স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।
চার্টের মূল উপাদান:
সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে কাজ করে এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।
লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।