বৃহস্পতিবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ
GBP/USD পেয়ারের 1H চার্ট
বৃহস্পতিবার, ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার সাথে GBP/USD পেয়ারের ট্রেড করা হয়েছে। তবে এই মুভমেন্টের পেছনে কোনো সুস্পষ্ট বা শক্তিশালী কারণ ছিল না। মনে করিয়ে দিই, মঙ্গলবার ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে র জড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনার খবরে মার্কিন ডলারের দর তীব্র এবং শক্তিশালীভাবে বৃদ্ধি পেয়েছিল, এবং বুধবার, ফেডারেল রিজার্ভের বৈঠকের "মধ্যমমাত্রার হকিশ বা কঠোর" ফলাফলের পর ডলারের মূল্যের মাঝারি মাত্রার ঊর্ধ্বমুখী মোমেন্টাম দেখা গিয়েছিল। তবে বৃহস্পতিবার ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের বৈঠকের ফলাফলকে কোনোভাবেই হকিশ বা কঠোর বলা যায় না, যা মধ্যমেয়াদে পাউন্ডের দরপতন অব্যাহত রাখার সুযোগ সৃষ্টি করেছিল।
শুক্রবার খবর বের হয় যে, ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে হামলা চালানোর সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছেন। এখন এ বিষয়ক সিদ্ধান্ত আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে আসার প্রত্যাশা করা হচ্ছে। তখন ট্রেডারদের মনে পড়ে যায় যে ট্রাম্প এখনো মার্কিন প্রেসিডেন্ট, এবং তারা নতুন উদ্যম নিয়ে ডলার বিক্রি করা শুরু করে। হায়ার টাইমফ্রেমে দেখা যায় যে, এই পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা এখনো অটুট রয়েছে, এবং এখনো ডলারের মূল্যের খুবই বিরল এবং দুর্বল মাত্রার কারেকশন দেখা যাচ্ছে।
GBP/USD পেয়ারের 5M চার্ট
৫-মিনিটের টাইমফ্রেমে বৃহস্পতিবার দুটি ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হয়, যদিও দিনের বেশিরভাগ সময় এই পেয়ারের মূল্যের সাইডওয়েজ মুভমেন্ট দেখা গেছে। ফেড এবং ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের বৈঠকের ফলাফল বেশ নিরপেক্ষ ছিল—যা মার্কেটে তেমন কোনো প্রভাব ফেলতে পারেনি। সকালে 1.3413–1.3421 জোন থেকে বাউন্স হয়েছিল, যা শর্ট পজিশন ওপেন করার সুযোগ দেয়, তবে মূল্য কেবলমাত্র প্রায় 18 পিপস প্রত্যাশিত দিকে মুভমেন্ট প্রদর্শন করতে পেরেছিল। এরপরের ৬ ঘণ্টায়, একই এরিয়ায় একটি বাই সিগন্যাল গঠিত হয়, তবে লং পজিশন তখনই ওপেন করা কার্যকর ছিল যখন ব্যাংক অব ইংল্যান্ডের বৈঠকের পর এটি স্পষ্ট হয়ে যায় যে, পাউন্ডের দরপতন সম্ভবত আর অব্যাহত না। এই পেয়ারের মূল্যের প্রত্যাশিত ঊর্ধ্বমুখী মোমেন্টাম শুরু হয়, তবে বেশিরভাগ ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্ট রাতের ট্রেডিংয়ে পরিলক্ষিত হয়।
শুক্রবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল:
ঘন্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে GBP/USD পেয়ারের মূল্যের মুভমেন্ট এখনো কেবলমাত্র ট্রাম্পের কর্মকাণ্ডের দ্বারা প্রভাবিত হচ্ছে এবং তার গৃহীত নীতিমালার প্রতি ট্রেডারদের মধ্যে অনিশ্চয়তা বিরাজ করছে। আগের মতোই, ট্রেডাররা ডলার কেনার চেয়ে এটি বিক্রি করার প্রতিটি সুযোগ কাজে লাগাচ্ছে। যতক্ষণ না মার্কেটের ট্রেডাররা বাণিজ্য যুদ্ধ শেষ হওয়ার দৃশ্যমান ইঙ্গিত পায় এবং ট্রাম্প স্বেচ্ছাচারী সিদ্ধান্ত নেয়া থেকে বিরত থাকেন ততক্ষণ সম্ভবত এই পরিস্থিতি চলতেই থাকবে। ডলারের দর মাঝে মাঝে বাড়তে পারে—এমনকি যদি প্রতিদিন দরপতনের শিকার নাও হয়—তবুও এমন ঘটনা এখনো বেশ দুর্লভ।
শুক্রবার, GBP/USD পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী মোমেন্টাম অব্যাহত থাকতে পারে, কারণ নিম্নমুখী প্রবণতা শেষ হয়ে গেছে। তবে যেহেতু উল্লেখযোগ্য কোনো খবর নেই, তাই স্বল্প মাত্রার অস্থিরতা এবং রেঞ্জবাউন্ড মুভমেন্টের সম্ভাবনা বেশি।
৫-মিনিটের টাইমফ্রেমে, এখন আপনি নিম্নলিখিত লেভেলগুলোতে ট্রেড করতে পারেন: 1.3043, 1.3102–1.3107, 1.3203–1.3211, 1.3259, 1.3329–1.3331, 1.3413–1.3421, 1.3518–1.3535, 1.3580–1.3592, 1.3643–1.3652, 1.3695, 1.3740। শুক্রবারের একমাত্র গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন হিসেবে মে মাসের যুক্তরাজ্যের রিটেইল সেলস বা খুচরা বিক্রয় সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে। যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালেন্ডারে গুরুত্বপূর্ণ তেমন কিছু নেই।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
- সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
- ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
- ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
- ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
- MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
- নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
- স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।
চার্টের মূল উপাদান:
সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে কাজ করে এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।
লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।