বৃহস্পতিবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ
GBP/USD পেয়ারের 1H চার্ট
বৃহস্পতিবার EUR/USD পেয়ারের মতোই GBP/USD পেয়ারের মূল্যের মুভমেন্ট দেখা গেছে, তবে তুলনামূলকভাবে অস্থিরতার মাত্রা কম ছিল। এই পেয়ারের মূল্য অ্যাসেন্ডিং ট্রেন্ডলাইনটি ব্রেক করেছে, তাই টেকনিক্যাল দৃষ্টিকোণ থেকে এই পেয়ারের আরও দরপতন এবং ডলারের দর বৃদ্ধির পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু এর পেছনে কি কোনো মৌলিক কারণ রয়েছে? প্রশ্নটি জটিল, কারণ মার্কেটের ট্রেডাররা এখনো ডলারের জন্য ইতিবাচক এমন বহু উপাদান উপেক্ষা করছে। গতকাল জানা যায় যে, মার্কিন বাণিজ্য আদালত ডোনাল্ড ট্রাম্প কর্তৃক বিশ্বের অর্ধেক দেশের ওপর আরোপিত শুল্ক স্থগিত করেছে, কিন্তু সন্ধ্যার দিকেই সেই একই আদালত ট্রাম্পের শুল্ক বাতিলের রায়ও স্থগিত করেছে। ফলে, বৈশ্বিক বাণিজ্য যুদ্ধ সংক্রান্ত পরিস্থিতিতে তেমন কোনো পরিবর্তন আসেনি। বর্তমান লেভেল থেকে ডলারের দরপতন অব্যাহত থাকতে পারে, কারণ এই মুহূর্তে বড় কোনো কারণের প্রয়োজন নেই। তাই এখন সবচেয়ে ভালো হবে টেকনিক্যাল সিগন্যাল এবং সেটআপের ওপর নির্ভর করে ট্রেড করা, কারণ মার্কেট আসলে কোন দিকে যাচ্ছে তা বোঝা অত্যন্ত কঠিন।
GBP/USD পেয়ারের 5M চার্ট
বৃহস্পতিবার ৫ মিনিটের টাইমফ্রেমে একটি কার্যকর ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হয়েছিল। ইউরোপীয় ট্রেডিং সেশনের শুরুতে মূল্য 1.3421–1.3443 এর এরিয়া ব্রেকআউট করে, ফলে নতুন ট্রেডাররা লং পজিশন ওপেন করতে পারত। ব্রিটিশ পাউন্ডের মূল্য সারাদিন কিছুটা হলেও ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে, যদিও এই বৃদ্ধি খুব একটা শক্তিশালী ছিল না। এই পেয়ারের মূল্য নিকটবর্তী লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছায়নি, তাই সন্ধ্যার দিকে ম্যানুয়ালি লং পজিশন ক্লোজ করে দেওয়া যেত।
শুক্রবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল:
ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেম অনুযায়ী, GBP/USD পেয়ারের মূল্যের মুভমেন্ট এখনো পুরোপুরিভাবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের কার্যকলাপের প্রতিক্রিয়া দ্বারা প্রভাবিত হচ্ছে এবং মার্কেটের ট্রেডাররা তার গৃহীত নীতিমালার প্রতি অত্যন্ত সংশয়ী অবস্থানে রয়েছে। বাণিজ্য উত্তেজনা কিছুটা হ্রাস পেয়েছে বলে ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে, তবে মার্কেটের ট্রেডাররা এতে খুব একটা আশাবাদী নয়। এই সপ্তাহে ডলারের দর কিছুটা বৃদ্ধি পেয়েছে, তবে এটি নিছক একটি টেকনিক্যাল কারেকশন বলেই মনে হচ্ছে, এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে। ট্রেন্ডলাইন ব্রেক করার পরেও আমরা এটিকে পূর্ণাঙ্গভাবে ডলারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা শুরু হয়েছে সেটি বলার ঝুঁকি নেব না।
শুক্রবার আবার GBP/USD পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী মুভমেন্ট শুরু হতে পারে, যেহেতু ট্রেন্ডলাইন ব্রেক করা হয়েছে। তবে, এমন মুভমেন্টের পেছনে খুব বেশি মৌলিক কারণ নেই। আমরা এখনো ডলারের দর বৃদ্ধির সম্ভাবনা নিয়ে সংশয়পূর্ণ অবস্থানে রয়েছি, তবে এই মুহূর্তে টেকনিক্যাল বিষয়গুলোর ভিত্তিতে ট্রেড করাই সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ হবে।
৫ মিনিটের টাইমফ্রেমে ট্রেডিংয়ের জন্য যেসব লেভেল বিবেচনায় রাখা উচিত: 1.2913, 1.2980–1.2993, 1.3043, 1.3102–1.3107, 1.3203–1.3211, 1.3259, 1.3329–1.3331, 1.3421–1.3443, 1.3537, 1.3580–1.3592, 1.3652–1.3660, 1.3695।
শুক্রবার যুক্তরাজ্যে কোনো গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট বা প্রতিবেদন প্রকাশের কথা নেই। যুক্তরাষ্ট্রে ব্যক্তিগত আয় ও ব্যয়, PCE প্রাইস ইনডেক্স এবং ইউনিভার্সিটি অব মিশিগান কনজ্যুমার সেন্টিমেন্ট ইনডেক্স সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে। তবে আমরা মনে করি না এই প্রতিবেদনগুলোর ফলাফল মার্কেটে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করবে।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
- সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
- ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
- ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
- ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
- MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
- নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
- স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।
চার্টের মূল উপাদান:
সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে কাজ করে এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।
লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।