বুধবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ
EUR/USD পেয়ারের 1H চার্ট

বুধবার EUR/USD কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী মুভমেন্ট অব্যাহত ছিল, এবং বৃহস্পতিবার রাতের দিকে এই পেয়ার তীব্র দরপতনের সম্মুখীন হয়। গতকাল বা বিশেষ করে রাতের বেলায় ডলারের পুনরায় দর বৃদ্ধির মতো কোনো উল্লেখযোগ্য মৌলিক কারণ ছিল না। টানা তিন দিন ধরে মার্কিন ডলারের দর বৃদ্ধি পাচ্ছে—যা অনেক দিন পর ঘটল। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো, মৌলিক প্রেক্ষাপটে ডলারের এমন তীব্র দর বৃদ্ধির ন্যায্যতা দেওয়ার মতো কোনো পরিবর্তন ঘটেনি। বুধবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বা ইউরোপীয় ইউনিয়নের পক্ষ থেকে কোনো প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়নি এবং মার্কেটের ট্রেডাররা ফেডারেল রিজার্ভের মিনিট বা কার্যবিবরণী পুরোপুরি উপেক্ষা করেছে। তবে আমরা আগে থেকেই সতর্ক করেছিলাম যে, মৌলিক ও সামষ্টিক অর্থনৈতিক কারণগুলোর পাশাপাশি টেকনিক্যাল কারণগুলোও গুরুত্বপূর্ণ। গত তিন মাসে ডলারের রেকর্ড পরিমাণ দরপতন ঘটেছে, তাই একটি কারেকশন আসা সময়ের ব্যাপার ছিল। মার্কেটের ট্রেডাররা পুরনো পজিশনে লাভ তুলে নেওয়ার সময় কখন আসবে, তা সঠিকভাবে পূর্বাভাস দেওয়া যায় না। আমরা কেবলমাত্র লোয়ার টাইমফ্রেমে টেকনিক্যাল টুল ব্যবহার করে প্রবণতার পরিবর্তন হওয়ার ইঙ্গিত খুঁজে বের করার চেষ্টা করতে পারি।
EUR/USD পেয়ারের 5M চার্ট
বুধবার ৫-মিনিটের টাইমফ্রেমে কোনো ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হয়নি। ইউরোপীয় সেশনের শুরুতে মূল্য 1.1292 লেভেলের খুব কাছাকাছি চলে আসে, কিন্তু এটি টেস্ট করতে ব্যর্থ হয়। বৃহস্পতিবার রাতের বেলায় 1.1267–1.1292 জোনের তীব্র ব্রেকআউট ঘটে মূল্য নিম্নমুখী, কিন্তু এই সিগন্যালের প্রতি তাৎক্ষণিকভাবে প্রতিক্রিয়া জানানো ছিল অত্যন্ত কঠিন ছিল। যদি কোনো নতুন ট্রেডার এই সিগন্যালের ভিত্তিতে ট্রেডে এন্ট্রি করে থাকেন, তাহলে তারা আজও সেই পজিশন হোল্ড করতে পারেন এবং ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করে নিতে পারেন।
বৃহস্পতিবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল:
ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে EUR/USD পেয়ারের মূল্য অ্যাসেন্ডিং ট্রেন্ডলাইনের নিচে নেমে গেছে। তবে ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর যে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা শুরু হয়েছিল, তা এখনো অব্যাহত থাকতে পারে। বাস্তবিক অর্থে, মার্কিন ডলারের ধারাবাহিক দরপতনের জন্য ট্রাম্প মার্কিন প্রেসিডেন্ট এটিই যথেষ্ট কারণ। মার্কেটের ট্রেডাররা এই কারণে ডলার থেকে বিনিয়োগ সরিয়ে নিচ্ছে। যদি ট্রাম্প আবার হুমকি-ধামকি প্রদান ও নতুন সিদ্ধান্ত নেওয়া শুরু করেন এবং নতুন করে শুল্ক আরোপ বা বিদ্যমান শুল্ক বাড়ান, তাহলে মার্কেটের ট্রেডারদের হাতে ডলার বিক্রি করা আর কোনো বিকল্প থাকবে না। বর্তমানে আমরা একটি টেকনিক্যাল কারেকশন প্রত্যক্ষ করছি।
বৃহস্পতিবার EUR/USD পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী কারেকশন অব্যাহত থাকতে পারে, বিশেষ করে যেহেতু ট্রেন্ডলাইন ব্রেক হয়ে গেছে। একই সঙ্গে, এইত মনে রাখা জরুরি যে, ডলারের দর বৃদ্ধির জন্য এখনো কোনো উল্লেখযোগ্য কারণ নেই।
৫-মিনিটের টাইমফ্রেমে ট্রেডিংয়ের জন্য প্রাসঙ্গিক লেভেলগুলো হলো: 1.0940–1.0952, 1.1011, 1.1088, 1.1132–1.1140, 1.1198, 1.1267–1.1292, 1.1354–1.1363, 1.1413–1.1424, 1.1474–1.1481, 1.1513, 1.1548, 1.1571, 1.1607–1.1622। ইউরোজোনে বৃহস্পতিবার কোনো গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট নির্ধারিত নেই, তবে যুক্তরাষ্ট্রে প্রথম প্রান্তিকের জিডিপির দ্বিতীয় অনুমান প্রকাশিত হবে। এটি খুব একটা গুরুত্বপূর্ণ সূচক নয় এবং ডলারের জন্য ইতিবাচক কিছু নিয়ে আসার সম্ভাবনাও কম।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
- সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
- ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
- ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
- ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
- MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
- নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
- স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।
চার্টের মূল উপাদান:
সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে ব্যবহৃত হয় এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।
লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।