GBP/USD পেয়ারের 5-মিনিটের চার্টের বিশ্লেষণ
বুধবার GBP/USD কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের ধীরগতির নিম্নমুখী মুভমেন্ট অব্যাহত ছিল, তবে এবার এর পেছনে কোনো মৌলিক ভিত্তি ছিল না। মনে করিয়ে দিই, সোমবারে ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতি ট্রাম্পের নমনীয় অবস্থানের কারণে ডলারের চাহিদা কিছুটা বাড়তে পারত এবং মঙ্গলবারে যুক্তরাষ্ট্রের ডিউরেবল গুডস অর্ডার সংক্রান্ত প্রতিবেদনের ফলাফল প্রত্যাশার তুলনায় কম দুর্বল আসে। আনুষ্ঠানিকভাবে এই দুটি কারণ মার্কিন ডলারের সামান্য ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতাকে সমর্থন করতে পারত। তবে আমরা ইতোমধ্যেই সেই সীমিত ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা প্রত্যক্ষ করেছি এবং সাম্প্রতিক মাসগুলোতে মার্কেটের ট্রেডাররা প্রায় যেকোনো কারণ বা খবর ডলারের বিরুদ্ধে কাজে লাগিয়েছে। তাই সামনের দিনগুলোতে ডলারের আরও দর বৃদ্ধি নিয়ে পূর্বাভাস দেওয়া এখনো কঠিন — যদিও গত কয়েক মাসে এটির মূল্য প্রায় ১৫০০ পয়েন্ট কমে গেছে।
বুধবার উল্লেখযোগ্য কোনো সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়নি। সন্ধ্যায় FOMC-এর সর্বশেষ বৈঠকের কার্যবিবরণী প্রকাশিত হয়, যা পূর্বের মতোই ট্রেডারদের মধ্যে কোনো উল্লেখযোগ্য প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি। এই পেয়ারের মূল্য বর্তমানে অ্যাসেন্ডিং চ্যানেলের নিচের সীমানার কাছাকাছি অবস্থান করছে, তাই হয় মূল্য সেই সীমানা ব্রেক করে নিচের দিকে যাবে — যা একটি নতুন নিম্নমুখী প্রবণতার সূচনা নির্দেশ করবে — অথবা সেখান থেকে রিবাউন্ড হয়ে পাউন্ডের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্ট পুনরায় শুরু হতে পারে।
৫-মিনিটের চার্টে স্পষ্টভাবে দেখা যাচ্ছে যে, ডলারের মূল্য বর্তমান অবস্থান ধরে রাখতে হিমশিম খাচ্ছে। সম্ভবত আরও আকর্ষণীয় লেভেলে পুনরায় পজিশন নেওয়ার উদ্দেশ্যে এই পেয়ারের আরও দরপতন ঘটানো হচ্ছে। যেহেতু প্রকৃতপক্ষে বাণিজ্য যুদ্ধের নিরসন হয়নি, তাই এখন কোনো বড় ট্রেডার ডলারে লং পজিশন নিচ্ছে এমন কল্পনা করাও কঠিন। বুধবার ক্রিটিক্যাল লাইনের কাছাকাছি এই পেয়ারের একটি ভালো মানের বাই সিগন্যাল গঠিত হয় , যা থেকে সামান্য লাভ করা গিয়েছে। এরপরের সিগন্যালগুলো দুর্বল এবং প্রভাবহীন ছিল।
COT রিপোর্ট
ব্রিটিশ পাউন্ডের COT রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে যে গত কয়েক বছরে কমার্শিয়াল ট্রেডারদের মনোভাব বারবার পরিবর্তিত হয়েছে। লাল এবং নীল লাইন — যা কমার্শিয়াল ও নন-কমার্শিয়াল ট্রেডারদের নিট পজিশন নির্দেশ করে — প্রায়ই একে অপরকে অতিক্রম করেছে এবং সাধারণত শূন্যের কাছাকাছি অবস্থান করেছে। বর্তমানে সেগুলো আবার কাছাকাছি রয়েছে, যা লং ও শর্ট পজিশনের প্রায় সমতা নির্দেশ করে। তবে গত দেড় বছরে নিট পজিশনের সংখ্যায় ধীরে ধীরে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা যাচ্ছে।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাণিজ্য নীতির কারণে ডলার এখনো দুর্বল হতে থাকায় ব্রিটিশ পাউন্ডের প্রতি মার্কেট মেকারদের চাহিদার তেমন গুরুত্ব নেই। যদি বৈশ্বিক বাণিজ্য যুদ্ধের উত্তেজনা প্রশমিত হওয়ার ধারাবাহিকতা আবার শুরু হয়, তাহলে ডলার শক্তিশালী হওয়ার একটি সুযোগ পেতে পারে — কিন্তু সেই সুযোগকে কাজে লাগাতে হবে।
ব্রিটিশ পাউন্ডের সর্বশেষ রিপোর্ট অনুযায়ী, "নন-কমার্শিয়াল" গ্রুপ 1,400 লং কন্ট্রাক্ট ক্লোজ করেছে এবং 1,800 শর্ট কন্ট্রাক্ট ওপেন করেছে, যার ফলে নিট লং পজিশনের সংখ্যা 3,200 কমেছে।
সম্প্রতি পাউন্ডের মূল্য উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে, তবে এটি জানা গুরুত্বপূর্ণ যে এর একমাত্র কারণ হচ্ছে ট্রাম্পের গৃহীত নীতি। একবার এই প্রভাব নিরপেক্ষ হয়ে গেলে, ডলারের দর আবারও বৃদ্ধি পেতে পারে। নিজস্ব কোনো আভ্যন্তরীণ চালিকা শক্তির কারণে পাউন্ডের মূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে না। তা সত্ত্বেও, এই মুহূর্তে "ট্রাম্প ফ্যাক্টর" ট্রেডারদের সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য যথেষ্ট।
GBP/USD পেয়ারের 1 ঘন্টার চার্টের বিশ্লেষণ
ঘণ্টাভিত্তিক চার্টে এখনো GBP/USD পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা বজায় রয়েছে, যা একটি ট্রেন্ড চ্যানেল থেকে সমর্থন পাচ্ছে। এই পেয়ারের মূল্যের ভবিষ্যৎ মুভমেন্ট পুরোপুরিভাবে ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং বৈশ্বিক বাণিজ্য যুদ্ধকে ঘিরে উদ্ভূত পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করছে। মার্কেটের ট্রেডারদের মধ্যে সামগ্রিকভাবে যুক্তরাষ্ট্র ও দেশটির প্রেসিডেন্টের প্রতি এখনো অত্যন্ত নেতিবাচক মনোভাব ও দৃষ্টিভঙ্গি বিরাজ করছে — যার ফলে ডলারের জন্য দীর্ঘমেয়াদে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা রাখা কঠিন হয়ে পড়েছে। ডলার নিয়মিত দরপতনের শিকার হচ্ছে, আর যখন শুল্ক সংক্রান্ত কোনো খবর আসে, তখন এই দরপতনের মাত্রা দ্বিগুণ হয়ে যায়।
২৯ মে আমরা নিম্নলিখিত গুরুত্বপূর্ণ ট্রেডিং লেভেলগুলো চিহ্নিত করছি: 1.2863, 1.2981–1.2987, 1.3050, 1.3125, 1.3212, 1.3288, 1.3358, 1.3439, 1.3489, 1.3537, 1.3637–1.3667 এবং 1.3741। সেনকৌ স্প্যান বি লাইন (1.3302) এবং কিজুন-সেন লাইনও (1.3487) ট্রেডিং সিগন্যাল লেভেল হিসেবেও কাজ করতে পারে। যখন মূল্য অনুকূল দিকে ২০ পিপস অগ্রসর হয়, তখন ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করার পরামর্শ দেয়া হচ্ছে। ইচিমোকু সূচকের লাইনগুলো দিনের বেলা অবস্থান পরিবর্তন করতে পারে, তাই সিগন্যাল নির্ধারণের সময় এটি বিবেচনায় নিতে হবে।
বৃহস্পতিবার যুক্তরাজ্যে কোনো গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট নির্ধারিত নেই এবং যুক্তরাষ্ট্রে একমাত্র উল্লেখযোগ্য প্রতিবেদন হিসেবে প্রথম প্রান্তিকের জিডিপির দ্বিতীয় অনুমান প্রকাশিত হবে। তবে, বাস্তবতার বিচারে এই প্রতিবেদন খুব একটা গুরুত্বপূর্ণ বা প্রভাবশালী নয়। আজ সম্ভবত স্বল্প মাত্রার অস্থিরতাসম্পন্ন মুভমেন্ট অব্যাহত থাকবে। বৃহস্পতিবার মার্কেটে টেকনিক্যাল বিষয়গুলোই মূল নিয়ামক হিসেবে কাজ করবে।
চিত্রের ব্যাখা:
- মূল্যের সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল – গাঢ় লাল লাইন; যেখানে মূল্যের মুভমেন্ট থেমে যেতে পারে। তবে এগুলো সরাসরি ট্রেডিং সিগন্যাল নয়।
- কিজুন সেন ও সেনকৌ স্প্যান বি লাইন – শক্তিশালী ইচিমোকু ইন্ডিকেটরের লাইন, যা ৪-ঘণ্টা চার্ট থেকে ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে স্থানান্তর করা হয়েছে।
- এক্সট্রিম লেভেল – হালকা লাল লাইন; যেখানে পূর্বে মূল্য রিবাউন্ড করেছে। এগুলো ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে কাজ করতে পারে।
- হলুদ লাইন – ট্রেন্ড লাইন, ট্রেন্ড চ্যানেল এবং অন্যান্য টেকনিক্যাল প্যাটার্ন নির্দেশ করে।
- COT ইন্ডিকেটর 1 – চার্টে প্রতিটি গ্রুপের ট্রেডারদের নিট পজিশনের পরিমাণ প্রদর্শন করে।