সোমবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ
EUR/USD পেয়ারের 1H চার্ট

সোমবার EUR/USD কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্ট অব্যাহত ছিল, যা শুক্রবার থেকেই শুরু হয়েছিল। কেবল দিনের দ্বিতীয়ার্ধে একটি স্বল্পমেয়াদি কারেকশন দেখা যায়, যার পেছনের কারণ ছিল ট্রাম্পের সেই সিদ্ধান্ত — যেখানে তিনি ইউরোপীয় পণ্যের ওপর ১ জুন থেকে শুল্ক বৃদ্ধির পরিকল্পনা বাতিল করেন। এবার ট্রাম্প হঠাৎ করে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেননি। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লায়েনের সঙ্গে একটি ফোনালাপে অংশ নেন, যেখানে সিদ্ধান্ত হয় যে বাণিজ্য আলোচনার জন্য আরও সময় দিতে শুল্ক বৃদ্ধির তারিখ পিছিয়ে দেওয়া হবে। মার্কেটের ট্রেডাররা এই ঘটনাকে বিশেষ গুরুত্ব দেয়নি; ডলার উল্লেখযোগ্যভাবে শক্তিশালী হতে পারেনি এবং ট্রেডাররা এউ পেয়ারের মূল্যকে শুক্রবারের সেই সর্বনিম্ন লেভেলে ফিরিয়ে নেওয়ার কোনো ইচ্ছাও দেখায়নি, যেখান থেকে ডলারের সর্বশেষ দরপতন শুরু হয়েছিল। সুতরাং, এটি স্পষ্ট যে মার্কেটের ট্রেডাররা এখনো ডলারের বিপক্ষে নতুন শর্ট পজিশন ওপেন করার জন্য যেকোনো অজুহাত ব্যবহার করছে। এমনকি যখন ইতিবাচক খবর আসে, সেটিও ডলার ও ট্রাম্পের গৃহীত নীতিমালার প্রতি ট্রেডারদের নেতিবাচক মনোভাবের পরিবর্তনের জন্য যথেষ্ট হয় না।
EUR/USD পেয়ারের 5M চার্ট
৫ মিনিটের টাইমফ্রেমে সোমবার এই পেয়ারের মাত্র একটি ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হয়। ইউরোপীয় সেশনের শুরুতে, মূল্য 1.1413–1.1424 জোন থেকে বাউন্স করে, যার পর অধিকাংশ সময় ধরে মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা পরিলক্ষিত হয়। শর্ট ট্রেড যেকোনো সময় ক্লোজ করা যেত, এবং গড় লাভ ছিল প্রায় ২৫ পিপস। পুরো দিনজুড়ে খুব একটা বেশি অস্থিরতা দেখা যায়নি।
মঙ্গলবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল:
ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেম অনুযায়ী EUR/USD পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা এখনো অটুট রয়েছে। মনে হচ্ছে, ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হওয়ার সময় থেকে শুরু হওয়া বুলিশ প্রবণতা অব্যাহত থাকবে। বর্তমান প্রেক্ষাপটে, শুধুমাত্র ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট — এই একটি তথ্যই ডলারের ধারাবাহিক দরপতনের জন্য যথেষ্ট। এই কারণেই মার্কেটের ট্রেডাররা কোনো দ্বিধা ছাড়াই ডলার থেকে বিনিয়োগ সরিয়ে নিচ্ছে। যখন ট্রাম্প হুমকি দেন, চূড়ান্ত শর্ত আরোপ করেন, অথবা শুল্ক বাড়ান, তখন মার্কেটের ট্রেডারদের হাতে খুব সীমিত বিকল্পই থাকে।
মঙ্গলবার, ট্রাম্প প্রধান বাণিজ্য অংশীদারদের ওপর চাপ অব্যাহত রাখলে EUR/USD পেয়ারের মূল্য আরও ঊর্ধ্বমুখী হতে পারে। এমনকি বাণিজ্য উত্তেজনা প্রশমনের ইঙ্গিতপূর্ণ খবরও ডলারকে তেমন কোনো সহায়তা দিচ্ছে না।
৫ মিনিটের চার্ট অনুযায়ী, নিম্নোক্ত লেভেলগুলো পর্যবেক্ষণ করা উচিত: 1.0940–1.0952, 1.1011, 1.1088, 1.1132–1.1140, 1.1198, 1.1267–1.1292, 1.1354–1.1363, 1.1413–1.1424, 1.1474–1.1481, 1.1513, 1.1548, 1.1571, 1.1607–1.1622।
মঙ্গলবার ইউরোজোনে কোনো গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট বা প্রতিবেদনের প্রকাশনা নির্ধারিত নেই। যুক্তরাষ্ট্রে ডিউরেবল গুডস অর্ডার সংক্রান্ত একটি অপেক্ষাকৃত গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে। এই প্রতিবেদন তাত্ত্বিকভাবে ডলারকে কিছুটা সহায়তা করতে পারে, তবে তা খুব সীমিত পরিসরে হবে। এটি বাস্তবিক অর্থে প্রবণতার কোনো পরিবর্তন আনবে — এমন সম্ভাবনা নেই।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
- সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
- ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
- ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
- ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
- MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
- নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
- স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।
চার্টের মূল উপাদান:
সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে ব্যবহৃত হয় এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।
লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।