GBP/USD পেয়ারের 5-মিনিটের চার্টের বিশ্লেষণ
সোমবারও ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার সাথে GBP/USD কারেন্সি পেয়ারের ট্রেড করা হয়েছে, যদিও দিনের বেলা সামান্য কারেকশন হতে দেখা গেছে। এই কারেকশনটি হয় সেই ঘোষণার পর, যখন ইউরোপীয় ইউনিয়নের ওপর শুল্ক বৃদ্ধির তারিখ ১ জুন থেকে পিছিয়ে ৯ জুলাই করা হয়। তবে শুক্রবার ও রবিবার রাত থেকে শুরু হওয়া ডলার বিক্রির প্রতিক্রিয়ায় মার্কেটে খুব একটা নেতিবাচক প্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি। যদি আপনি GBP/USD পেয়ারের ঘণ্টাভিত্তিক চার্ট দেখেন, তাহলে স্পষ্ট বোঝা যাবে যে পাউন্ডের মূল্য ধীরে ধীরে ঊর্ধ্বমুখী রয়েছে। ১০০ পিপস যোগ হওয়ায় এই চিত্রে কোনো পরিবর্তন আসেনি। ৪-ঘণ্টা ও দৈনিক চার্টেও একই রকম পরিস্থিতি দেখা যাচ্ছে। তাই বোঝা যাচ্ছে, সাম্প্রতিক অতিরিক্ত "লং পজিশনের" অ্যাকুমুলেশন নিয়েও ট্রেডাররা তেমন উদ্বিগ্ন নয়।
আমরা আগেও বহুবার বলেছি, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ব্রিটিশ পাউন্ডের মূল্য যেভাবে ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে, তা দেশটির অর্থনৈতিক বা মৌলিক প্রেক্ষাপট দ্বারা পুরোপুরি সমর্থিত নয়। যুক্তরাজ্যের পরিস্থিতি এমন কিছু নয় যে বিটকয়েনের মতো পাউন্ডের দর বৃদ্ধি ন্যায্যতা পাবে। কিন্তু মার্কেটের ট্রেডাররা এখনো "ট্রাম্প ফ্যাক্টর"-কে মূল্যায়নে নিচ্ছে এবং এই পেয়ার বিক্রির কথা ভাবছেও না। বর্তমান মুভমেন্টের খুব বেশি বিশ্লেষণও প্রয়োজন নেই। পাউন্ডের মূল্যের ৫০ বা ১০০ পিপস কারেকশন হলেও তাতে কিছুই যায় আসে না — বেশিরভাগ সময়েই এটির মূল্য ঊর্ধ্বমুখী থাকে।
যতদিন ট্রেডাররা ফেডারেল রিজার্ভ, যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি এবং শুল্কের বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়ে অনিশ্চয়তায় থাকবে, ততদিন এই ঊর্ধ্বমুখী মোমেন্টাম বজায় থাকতে পারে। বর্তমানে মার্কেটের ট্রেডাররা সবকিছুতেই সবচেয়ে নেতিবাচক দৃশ্যপট মূল্যায়ন করছে — কারণ ট্রাম্পের গৃহীত নীতিমালার প্রেক্ষাপটে এটিই সবচেয়ে যৌক্তিক।
সোমবার ৫ মিনিটের চার্টে তিনটি ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হয়েছিল, তবে বেশিরভাগ মুভমেন্ট ঘটেছে এশিয়ান সেশনে। ইউরোপীয় ও মার্কিন সেশন অপেক্ষাকৃত শান্ত ছিল। পেয়ারটির মূল্য প্রথমে 1.3572 লেভেল ব্রেক করে, এরপর উপরের দিক থেকে সেই লেভেল থেকে বাউন্স করে, পরে আবার এর নিচে কনসোলিডেট করে — তখন পর্যন্ত মোমেন্টাম অনেকটাই নিঃশেষ হয়ে যায়। তিনটি ক্ষেত্রেই আমরা সেই প্রত্যাশিত ফ্ল্যাট মুভমেন্টই দেখতে পেয়েছি, যার পেছনে অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে তেমন গুরুত্বপূর্ণ কিছু না থাকা একটি বড় কারণ।
COT রিপোর্ট
ব্রিটিশ পাউন্ডের COT রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে যে গত কয়েক বছরে কমার্শিয়াল ট্রেডারদের মনোভাব বারবার পরিবর্তিত হয়েছে। লাল এবং নীল লাইন — যা কমার্শিয়াল ও নন-কমার্শিয়াল ট্রেডারদের নিট পজিশন নির্দেশ করে — প্রায়ই একে অপরকে অতিক্রম করেছে এবং সাধারণত শূন্যের কাছাকাছি অবস্থান করেছে। বর্তমানে সেগুলো আবার কাছাকাছি রয়েছে, যা লং ও শর্ট পজিশনের প্রায় সমতা নির্দেশ করে। তবে গত দেড় বছরে নিট পজিশনের সংখ্যায় ধীরে ধীরে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা যাচ্ছে।
ডোনাল্ড ট্রাম্পের বাণিজ্য নীতির কারণে ডলার এখনো দুর্বল হতে থাকায় ব্রিটিশ পাউন্ডের প্রতি মার্কেট মেকারদের চাহিদার তেমন গুরুত্ব নেই। যদি বৈশ্বিক বাণিজ্য যুদ্ধের উত্তেজনা প্রশমিত হওয়ার ধারাবাহিকতা আবার শুরু হয়, তাহলে ডলার শক্তিশালী হওয়ার একটি সুযোগ পেতে পারে — কিন্তু সেই সুযোগকে কাজে লাগাতে হবে।
ব্রিটিশ পাউন্ডের সর্বশেষ রিপোর্ট অনুযায়ী, "নন-কমার্শিয়াল" গ্রুপ 1,400 লং কন্ট্রাক্ট ক্লোজ করেছে এবং 1,800 শর্ট কন্ট্রাক্ট ওপেন করেছে, যার ফলে নিট লং পজিশনের সংখ্যা 3,200 কমেছে।
সম্প্রতি পাউন্ডের মূল্য উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে, তবে এটি জানা গুরুত্বপূর্ণ যে এর একমাত্র কারণ হচ্ছে ট্রাম্পের গৃহীত নীতি। একবার এই প্রভাব নিরপেক্ষ হয়ে গেলে, ডলারের দর আবারও বৃদ্ধি পেতে পারে। নিজস্ব কোনো আভ্যন্তরীণ চালিকা শক্তির কারণে পাউন্ডের মূল্য বৃদ্ধি পাচ্ছে না। তা সত্ত্বেও, এই মুহূর্তে "ট্রাম্প ফ্যাক্টর" ট্রেডারদের সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য যথেষ্ট।
GBP/USD পেয়ারের 1 ঘন্টার চার্টের বিশ্লেষণ
ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেম অনুযায়ী, GBP/USD পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্ট এখনো বিদ্যমান এবং একটি প্রাইস চ্যানেল থেকে এটি সমর্থন পাচ্ছে। এই পেয়ারের মূল্যের ভবিষ্যৎ মুভমেন্ট এখন সম্পূর্ণভাবে ডোনাল্ড ট্রাম্প ও বৈশ্বিক বাণিজ্যযুদ্ধ সংক্রান্ত অগ্রগতির ওপর নির্ভর করছে। তবে এটাও বলা যায়, মার্কেটের ট্রেডাররা সামগ্রিক মনোভাব — বিশেষ করে আমেরিকা এবং ট্রাম্পকে ঘিরে — সেটিও একটি বড় নিয়ামক হতে পারে। বর্তমানে সেই মনোভাব অত্যন্ত নেতিবাচক। ডলারের দরপতন অব্যাহত রয়েছে — এবং যখনই শুল্ক সংক্রান্ত কোনো খবর আসে, তখন সেই দরপতন আরও তীব্র হয়ে ওঠে।
২৭ মে ট্রেডিংয়ের জন্য গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণযোগ্য লেভেলগুলো হলো: 1.2863, 1.2981–1.2987, 1.3050, 1.3125, 1.3212, 1.3288, 1.3358, 1.3439, 1.3489, 1.3537, 1.3637–1.3667, 1.3741। সেইসাথে সেনকৌ স্প্যান বি লাইন (1.3269) এবং কিজুন-সেন লাইন (1.3463) থেকেও ট্রেডিং সিগন্যাল পাওয়া যেতে পারে। যখন মূল্য আপনার অনুকূলে ২০ পিপস অগ্রসর হয়, তখন ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করা উচিত — কারণ এটি ভুল সিগন্যালের ঝুঁকি হ্রাস করে। দিনের বেলায় ইচিমোকু ইনডিকেটরের লাইনগুলোর অবস্থান পরিবর্তিত হতে পারে এবং সিগন্যাল নির্ধারণের সময় এটি বিবেচনায় রাখতে হবে।
মঙ্গলবার যুক্তরাজ্যে কোনো গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট নির্ধারিত নেই। যুক্তরাষ্ট্রে ডিউরেবল গুডস অর্ডার সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে — এটি হয়তো ডলারের জন্য "অন্ধকারের মধ্যে আশার আলো" হয়ে উঠতে পারে এবং এই পেয়ারের মূল্যের সামান্য নিম্নমুখী কারেকশন ঘটাতে পারে।
চিত্রের ব্যাখা:
- মূল্যের সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল – গাঢ় লাল লাইন; যেখানে মূল্যের মুভমেন্ট থেমে যেতে পারে। তবে এগুলো সরাসরি ট্রেডিং সিগন্যাল নয়।
- কিজুন সেন ও সেনকৌ স্প্যান বি লাইন – শক্তিশালী ইচিমোকু ইন্ডিকেটরের লাইন, যা ৪-ঘণ্টা চার্ট থেকে ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে স্থানান্তর করা হয়েছে।
- এক্সট্রিম লেভেল – হালকা লাল লাইন; যেখানে পূর্বে মূল্য রিবাউন্ড করেছে। এগুলো ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে কাজ করতে পারে।
- হলুদ লাইন – ট্রেন্ড লাইন, ট্রেন্ড চ্যানেল এবং অন্যান্য টেকনিক্যাল প্যাটার্ন নির্দেশ করে।
- COT ইন্ডিকেটর 1 – চার্টে প্রতিটি গ্রুপের ট্রেডারদের নিট পজিশনের পরিমাণ প্রদর্শন করে।