গতকালের নিয়মিত সেশনের শেষে মার্কিন স্টক সূচকগুলো নিম্নমুখী হয়েছে। S&P 500 সূচক 0.67% হ্রাস পেয়েছে, নাসডাক 100 সূচক 1.00% হ্রাস পেয়েছে এবং ডাও জোন্স ইন্ডাস্ট্রিয়াল এভারেজ সূচক 0.61% হ্রাস পেয়েছে। তবে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইউরোপীয় পণ্যের ওপর আগ্রাসীভাবে শুল্ক আরোপ স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নেয়ার পরপরই আজ মার্কিন এবং ইউরোপীয় স্টক সূচকের ফিউচার ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে। S&P 500 এবং নাসডাক 100-এর ফিউচার 1% বেড়েছে, আর ইউরো Stoxx 50 ফিউচার বেড়েছে 1.6%। গতকাল ট্রাম্প ঘোষণা দেন যে, ইউরোপীয় ইউনিয়নের পণ্যের ওপর ৫০% শুল্ক আরোপের তারিখ ১ জুন থেকে পিছিয়ে ৯ জুলাই করা হয়েছে।

এই অপ্রত্যাশিত ঘটনাপ্রবাহ বৈশ্বিক মার্কেটে আশাবাদ সৃষ্টি করে। বিনিয়োগকারীরা এই পদক্ষেপকে যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের মধ্যে বাণিজ্য উত্তেজনা প্রশমনের একটি সম্ভাব্য সংকেত হিসেবে দেখেছে, যা তাৎক্ষণিকভাবে অ্যাসেটের মূল্যে ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। এই বিলম্ব দুই পক্ষকে আলোচনার জন্য অতিরিক্ত সময় এবং সমঝোতার পথ খুঁজে পাওয়ার সুযোগ দিয়েছে।

তবে, ট্রেডারদের ইতিবাচক প্রতিক্রিয়ার মাঝেও বৈশ্বিক অর্থনীতির দীর্ঘমেয়াদি পূর্বাভাস নিয়ে উদ্বেগ এখনো বজায় রয়েছে। প্রধান অর্থনৈতিক শক্তিগুলোর মধ্যে চলমান বাণিজ্য বিরোধ সরবরাহ শৃঙ্খলের ওপর চাপ সৃষ্টি করছে এবং বিনিয়োগে প্রতিবন্ধকতা হয়ে দাঁড়িয়েছে।

• অপরিশোধিত তেলের দাম কিছুটা বেড়েছে
• ইউএস ট্রেজারি ফিউচারের দর কমেছে
• নিরাপদ বিনিয়োগের চাহিদা কমে যাওয়ায় স্বর্ণের দাম 0.3% হ্রাস পেয়েছে

তবে অনেকেই বলছেন, ট্রাম্পের সাম্প্রতিক পদক্ষেপ মার্কেটে অনিশ্চয়তা আরও বাড়িয়েছে। শুল্ক আরোপের সময়সীমা পিছিয়ে দিলেও বাণিজ্যযুদ্ধের আখ্যান আবারও আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে ফিরে এসেছে, বিশেষ করে ট্রাম্পের প্রস্তাবিত কর ছাড় ও তার ফলে বাজেট ঘাটতির সম্ভাবনা গত সপ্তাহজুড়ে মার্কেটে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।

ট্রাম্পের শুল্ক কৌশলের ক্ষেত্রে একটি ধরনের দেখা যাচ্ছে: কঠোর হুমকির পর সাধারণত এক ধাপ বিরতি আসে, যেখানে আলোচনা হয়। উল্লেখযোগ্য যে, ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডার লায়েনের সঙ্গে ফোনালাপের পরই ট্রাম্প সময়সীমা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেন।

ভন ডার লায়েন রবিবারের এক বিবৃতিতে বলেন, ইউরোপ দৃঢ় শক্ত অবস্থানে থেকে দ্রুতই আলোচনায় যেতে প্রস্তুত, তবে একটি কার্যকর চুক্তি হতে সময় লাগবে — এ বিষয়টি তিনি জোর দিয়ে উল্লেখ করেন।

ট্রাম্পের সাম্প্রতিক মন্তব্যের পর মার্কিন ডলারের প্রতি আগ্রহ কিছুটা কমে গেছে। ২০ মে শেষ হওয়া সপ্তাহে স্পেকুলেটিভ ট্রেডাররা ডলারের প্রতি বিয়ারিশ দৃষ্টিভঙ্গি বজায় রাখলেও, তাদের পজিশনের পরিমাণ $16.5 বিলিয়ন থেকে হ্রাস পেয়ে দাঁড়ায় $12.4 বিলিয়নে। এটি স্পষ্টভাবে ইঙ্গিত দেয় যে, ট্রাম্পের অনিয়ন্ত্রিত নীতিমালার কারণে ডলারের প্রতি আগ্রহ ক্রমশ হ্রাস পাচ্ছে।

S&P 500 টেকনিক্যাল আউটলুক:
আজ ক্রেতাদের প্রধান লক্ষ্য হলো $5,877 লেভেলের নিকটবর্তী রেজিস্ট্যান্স ব্রেক করা। এই লেভেল ব্রেক করা হলে আরও ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্টের সংকেত পাওয়া যাবে এবং পরবর্তী টার্গেট হবে $5,897।

ক্রেতাদের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য হলো $5,915 লেভেলের ওপর নিয়ন্ত্রণ নেওয়া, যা ক্রেতাদের নিয়ন্ত্রণ আরও শক্তিশালী করবে।

যদি মার্কেটে ঝুঁকি নেওয়ার আগ্রহ হ্রাস যায় এবং মূল্য নিম্নমুখী হয়, তাহলে ক্রেতাদের $5,854 লেভেলে সক্রিয় হতে হবে। এই লেভেল ব্রেক করা হলে সূচকটি দ্রুত হ্রাস পেয়ে $5,833-এ নেমে যেতে পারে এবং এরপর $5,812 পর্যন্ত দরপতন প্রসারিত হতে পারে।