শুক্রবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ
GBP/USD পেয়ারের 1H চার্ট
শুক্রবার GBP/USD পেয়ারের মূল্যও আত্মবিশ্বাসের সাথে ঊর্ধ্বমুখী হয়েছে, যা গত দুই সপ্তাহ ধরে গঠিত সামগ্রিক ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার ধারাবাহিকতা এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন থেকে আমদানিকৃত পণ্যের ওপর ৫০% শুল্ক আরোপের ট্রাম্পের ঘোষণার ফলাফল হিসেবে বিবেচনা করা যায়। ফলে শুক্রবার মার্কিন ডলারের ভাগ্য কার্যত নির্ধারিত হয়ে যায়। ডলারের দরপতন দীর্ঘায়িত হতে পারে, কারণ গত সপ্তাহে বাণিজ্যযুদ্ধ প্রশমনের কোনো লক্ষণ দেখা যায়নি। ট্রাম্প কেবলমাত্র শুল্ক আরোপিত দেশগুলোর জন্য তিন মাসের "শুল্কছাড়" দিয়েছেন, যাতে তারা যুক্তরাষ্ট্রের জন্য লাভজনক কোনো প্রস্তাব দিতে পারে। মূলত, ট্রাম্প নিজে কোনো রকম ছাড় দেওয়ার ইচ্ছা রাখেন না। তিনি এখনো মার্কিন বাজারে প্রবেশাধিকার দেওয়ার বিনিময়ে বিশ্বের অর্ধেক দেশের ওপর শুল্ক আরোপ করতে চান। এমনকি চীনের ক্ষেত্রেও শুল্ক হ্রাস বাণিজ্যযুদ্ধ প্রশমন প্রক্রিয়ার কোনো অংশ ছিল না — এটি ছিল দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য স্বার্থরক্ষার একটি প্রয়াস। শুল্ক কেবলমাত্র এমন মাত্রায় সমন্বয় করা হয়েছে যাতে কিছুটা হলেও বাণিজ্য কার্যক্রম চালানো সম্ভব হয়।
GBP/USD পেয়ারের 5M চার্ট
শুক্রবার ৫ মিনিটের টাইমফ্রেমে কেবল একটি ট্রেডিং সিগন্যাল গঠিত হয়েছিল, এবং এটি অত্যন্ত সম্ভাবনাময় সিগন্যাল ছিল। ইউরোপীয় সেশন শুরুর সময়েই মূল্য 1.3421–1.3443 জোন থেকে বাউন্স করে এবং দিনের বাকি সময় জুড়ে একমুখী মুভমেন্ট দেখা যায়। দিনের শেষে মূল্য 1.3537 লেভেলে পৌঁছে যায়, যেখানে ট্রেডাররা প্রফিট বুক করতে পারত। এই মুভমেন্ট থেকে মোট প্রায় ৭০ পিপস মুনাফা করা গিয়েছে।
সোমবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল:
ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে GBP/USD পেয়ারের মূল্যের মুভমেন্ট এখন পুরোপুরিভাবে ট্রাম্পের পদক্ষেপের ওপর নির্ভর করছে এবং ট্রাম্পের গৃহীত নীতিমালা প্রতি মার্কেটের ট্রেডারদের মধ্যে গভীরভাবে সংশয়পূর্ণ মনোভাব বজায় রয়েছে। মনে করিয়ে দিই: যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্যের মধ্যে বাণিজ্যচুক্তি বা যুক্তরাষ্ট্র-চীনের মধ্যে শুল্ক হ্রাস — এসব কিছুই ডলারের পক্ষে কাজ করার কথা, পাউন্ডের পক্ষে নয়। ব্যাংক অব ইংল্যান্ড যদি সুদের হার কমায় এবং ফেডারেল রিজার্ভ সুদের হার অপরিবর্তিত রাখে, সেটিও ডলারের পক্ষে ইতিবাচক, পাউন্ডের জন্য নয়। অথচ বাস্তবে আমরা তার উল্টো প্রতিক্রিয়া ও মুভমেন্ট দেখছি। মার্কেটের ট্রেডাররা এখন ডলারের পক্ষে থাকা ৯০% প্রতিবেদনই উপেক্ষা করছে।
সোমবার GBP/USD পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্ট অব্যাহত থাকতে পারে। মার্কেটের ট্রেডাররা আবারও ডলার বিক্রির জন্য যেকোনো কারণ খুঁজবে — অথবা কেবল নতুন কোনো সংবাদ শিরোনামের জন্য অপেক্ষা করবে। প্রতিদিন মার্কেটের সার্বিক পরিস্থিতি একইরকম থেকে যাচ্ছে।
৫ মিনিটের চার্ট অনুযায়ী, এখন ট্রেডিংয়ের জন্য নিম্নলিখিত লেভেলগুলো বিবেচনায় রাখা উচিত: 1.2848–1.2860, 1.2913, 1.2980–1.2993, 1.3043, 1.3102–1.3107, 1.3203–1.3211, 1.3259, 1.3329–1.3331, 1.3421–1.3443, 1.3537, 1.3580–1.3598। সোমবার যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রে কোনো গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট নির্ধারিত নেই, তবে এটা ভুলে গেলে চলবে না যে ডোনাল্ড ট্রাম্প যেকোনো সময় নতুন করে শুল্ক আরোপের ঘোষণা করতে পারেন — অথবা আরও কোনো উল্লেখযোগ্য সিদ্ধান্ত নিতে পারেন।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
- সিগনালের শক্তি: যত দ্রুত একটি সিগন্যাল (রিবাউন্ড বা ব্রেকআউট) গঠিত হয়, সিগন্যালটিকে ততই শক্তিশালী হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
- ভুল সিগন্যাল: যদি কোনো লেভেলের কাছে দুই বা ততোধিক ভুল ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়, তাহলে ঐ লেভেল থেকে প্রাপ্ত পরবর্তী সিগন্যালগুলোকে উপেক্ষা করা উচিত।
- ফ্ল্যাট মার্কেট: যখন মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্ট দেখা যায়, তখন পেয়ারগুলোতে একাধিক ভুল সিগন্যাল গঠিত হতে পারে অথবা কোনো সিগন্যাল না-ও গঠিত হতে পারে। মার্কেটে ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়ামাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেওয়াই ভালো।
- ট্রেডিংয়ের সময়সূচী: ইউরোপীয় সেশন শুরু থেকে মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত ট্রেড ওপেন করুন এবং এরপর সকল ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করে ফেলুন।
- MACD সিগন্যাল: ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে কেবল সেই MACD সিগন্যালগুলোর ওপর ভিত্তি করে ট্রেড করুন, যেগুলো উচ্চ মাত্রার অস্থিরতা এবং ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেলের মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া প্রবণতা হিসেবে বিবেচিত।
- নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল খুব কাছাকাছি (৫–২০ পিপসের মধ্যে) অবস্থিত হয়, তাহলে সেগুলোকে সাপোর্ট বা রেজিস্ট্যান্স জোন হিসেবে বিবেচনা করুন।
- স্টপ লস: মূল্য কাঙ্ক্ষিত দিকের দিকে ১৫ পিপস মুভমেন্ট প্রদর্শন করলে, ব্রেকইভেনে স্টপ লস সেট করুন। এতে করে ভুল সিগন্যালের কারণে লোকসানের ঝুঁকি কমে আসে।
চার্টের মূল উপাদান:
সাপোর্ট ও রেজিস্ট্যান্স লেভেল: এই লেভেলগুলো পজিশন ওপেন বা ক্লোজ করার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে কাজ করে এবং টেক প্রফিট সেট করার ক্ষেত্রেও উপযোগী।
লাল লাইনসমূহ: চ্যানেল বা ট্রেন্ডলাইন, যা বর্তমান প্রবণতা এবং ট্রেডের সম্ভাব্য দিকনির্দেশনা প্রদান করে।
MACD ইনডিকেটর (14,22,3): হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন বিশ্লেষণের জন্য একটি অতিরিক্ত ট্রেডিং সিগন্যালের উৎস হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
গুরুত্বপূর্ণ ইভেন্ট ও প্রতিবেদন: এই তথ্যগুলো অর্থনৈতিক ক্যালেন্ডারে পাওয়া যায় এবং মূল্যের মুভমেন্টে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে। গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশের সময় সতর্কতা অবলম্বন করুন বা মার্কেট থেকে বেরিয়ে আসুন, যাতে হঠাৎ করে মূল্যের রিভার্সাল বা বিপরীতমুখী হওয়ার প্রবণতা এড়ানো যায়।
ফরেক্স ট্রেডিংয়ে নতুন ট্রেডারদের মনে রাখতে হবে প্রতিটি ট্রেড লাভজনক হবে না। দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ে সফলতা অর্জনের জন্য একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ এবং সঠিক মানি ম্যানেজমেন্ট অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।