বুধবারের ট্রেডের বিশ্লেষণ
EUR/USD পেয়ারের 1H চার্ট
বুধবার ধীর-স্থিরভাবে EUR/USD কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্ট অব্যাহত ছিল। মূল্য 1.1267 এর লেভেল ব্রেক করেছে, যা এর আগে বহুবার ব্রেক করতে ব্যর্থ হয়েছিল, এবং একটি নতুন অ্যাসেন্ডিং ট্রেন্ডলাইন গঠিত হয়েছে। ফলে এখন সবকিছুই ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রত্যাবর্তনের পর শুরু হওয়া ৪ মাসব্যাপী ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা পুনরারম্ভের মতো মনে হচ্ছে। এবারও মার্কেটের ট্রেডারদের কাছে ডলার বিক্রির জন্য কোনো শক্তিশালী কারণ ছিল না, কারণ ট্রাম্প নতুন কোনো শুল্ক আরোপ করেননি কিংবা এমন কোনো সিদ্ধান্ত নেননি যা মার্কিন অর্থনীতি বা বৈশ্বিক স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি তৈরি করতে পারে। বরং, হোয়াইট হাউস চলমান বাণিজ্য আলোচনা ও শুল্ক হ্রাসের মাধ্যমে গত এক মাসে বাণিজ্য সংঘাত প্রশমনের ইঙ্গিত দিয়েছে। তবুও, আমরা দেখতে পাচ্ছি, এই সংবাদও মার্কিন ডলারের বিক্রি থামাতে পারেনি। মার্কেটের ট্রেডাররা কার্যত এখনো ডলার, ট্রাম্প এবং সামগ্রিক মার্কিন শুল্ক নীতির প্রতি নেতিবাচক মনোভাব প্রকাশ করছে।
EUR/USD পেয়ারের 5M চার্ট
বুধবার 5-মিনিটের টাইমফ্রেমে একটি মাত্র ট্রেডিং সিগনাল গঠিত হয়েছে। এশিয়ান সেশনে পেয়ারটির মূল্য 1.1275–1.1292 এরিয়া ব্রেক করে এবং সারাদিন স্থিরভাবে ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্ট প্রদর্শন করে। নিকটবর্তী টার্গেট লেভেলগুলো অনেক দূরে ছিল, এবং 1.1354–1.1363 এরিয়া নতুনভাবে গঠিত হয়েছে, যা আগের চার্টে ছিল না। তাই রাতেই ওপেন করা একমাত্র লং পজিশনটি সারাদিন যেকোনো সময়ে ক্লোজ করে মুনাফা করা যেত।
বৃহস্পতিবারের ট্রেডিংয়ের কৌশল:
ঘণ্টাভিত্তিক টাইমফ্রেমে EUR/USD পেয়ারের মূল্য ডিসেন্ডিং চ্যানেলের ওপরে কনসোলিডেট করেছে এবং কোনো মৌলিক কারণ ছাড়াই ঊর্ধ্বমুখী মুভমেন্ট অব্যাহত রয়েছে। মনে হচ্ছে প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্পের দ্বায়িত্ব নেয়ার সময় শুরু হওয়া ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা এখনো অব্যাহত রয়েছে। এবার মার্কেটের ট্রেডারদের নতুন কোনো শুল্ক, নিষেধাজ্ঞা বা ট্রাম্পের উচ্চ প্রভাবসম্পন্ন সিদ্ধান্তের দরকার পড়েনি। কেবলমাত্র মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্পের উপস্থিতি—এই বাস্তবতাই বর্তমানে ডলার বিক্রির জন্য যথেষ্ট কারণ।
বৃহস্পতিবার আবারও মূলত টেকনিক্যাল বিষয়গুলোর উপর ভিত্তি করে EUR/USD পেয়ারের ট্রেডিং করা হবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। সামষ্টিক অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপট এখনো এই পেয়ারের মূল্যের মুভমেন্টে কার্যত কোনো প্রভাব ফেলছে না, এবং মার্কেটের ট্রেডাররা আবারও ডলার বিক্রি করতে প্রস্তুত রয়েছে বলে মনে হচ্ছে— নির্দিষ্ট কারণ থাকুক বা না থাকুক কোনো কিছুই বিবেচনা করা হচ্ছে না।
৫-মিনিট টাইমফ্রেমে ট্রেডিংয়ের জন্য পর্যবেক্ষণযোগ্য লেভেলগুলো হচ্ছে: 1.0940–1.0952, 1.1011, 1.1088, 1.1132–1.1140, 1.1198, 1.1275–1.1292, 1.1354–1.1363, 1.1413–1.1424, 1.1474–1.1481, 1.1513, 1.1548, 1.1571, 1.1607–1.1622।
বৃহস্পতিবার ইউরোজোন ও যুক্তরাষ্ট্রে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেদন প্রকাশিত হবে, তবে এগুলোর প্রভাবে মার্কেটে সামগ্রিক পরিস্থিতির পরিবর্তন হওয়ার সম্ভাবনা কম। ডলারের মূল্য সাময়িকভাবে কিছুটা বাড়তে পারে, কিন্তু বর্তমানে এমন কোনো ইঙ্গিত নেই যে EUR/USD পেয়ারের মূল্যের নিম্নমুখী প্রবণতা শুরু হবে। যেকোনো পরিস্থিতিতেই, এমনকি টেকনিক্যাল ভিত্তিতে ট্রেন্ডলাইনের নিচে কনসোলিডেশন না হলে, ডলারের উল্লেখযোগ্য মূল্য বৃদ্ধির সম্ভাবনা খুবই কম।
ট্রেডিং সিস্টেমের মূল নিয়মাবলী:
1) সিগন্যালের শক্তি: সিগন্যাল গঠন করতে কতক্ষণ সময় নেয় তার উপর ভিত্তি করে সিগন্যালের শক্তি নির্ধারণ করা হয় (রিবাউন্ড বা লেভেলের ব্রেকআউট)। এটি গঠন করতে যত কম সময় লাগবে, সিগন্যাল তত শক্তিশালী হবে।
2) ভুল সিগন্যাল: যদি ভুল সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে নির্দিষ্ট লেভেলের কাছাকাছি দুটি বা ততোধিক পজিশন ওপেন করা হয় (যা টেক প্রফিট ট্রিগার করেনি বা নিকটতম লক্ষ্যমাত্রায় পৌছায়নি), তাহলে এই লেভেলে প্রাপ্ত পরবর্তী সমস্ত সিগন্যাল উপেক্ষা করা উচিত।
3) ফ্ল্যাট মার্কেট: ফ্ল্যাট মার্কেটের সময়, যেকোন পেয়ারের একাধিক ভুল সিগন্যাল তৈরি হতে পারে বা কোন সিগন্যাল নাও গঠিত হতে পারে। যাই হোক না কেন, ফ্ল্যাট মুভমেন্টের ইঙ্গিত পাওয়া মাত্র ট্রেডিং বন্ধ করে দেয়া উচিত।
4) ট্রেডিং টাইমফ্রেম: ইউরোপীয় সেশনের শুরু এবং মার্কিন সেশনের মাঝামাঝি সময়ে ট্রেড ওপেন করা উচিত। এর বাইরে সমস্ত ট্রেড ম্যানুয়ালি ক্লোজ করতে হবে।
5) MACD সূচকের সিগন্যাল: প্রতি ঘন্টার চার্টে, শুধুমাত্র উল্লেখযোগ্য ভোলাট্যালিটি এবং প্রতিষ্ঠিত প্রবণতার মধ্যেই MACD থেকে প্রাপ্ত সিগন্যালের উপর ভিত্তি করে ট্রেড করার পরামর্শ দেওয়া হয়, যা একটি ট্রেন্ডলাইন বা ট্রেন্ড চ্যানেল দ্বারা নিশ্চিত করা হয়।
6) নিকটতম লেভেল: যদি দুটি লেভেল একে অপরের খুব কাছাকাছি অবস্থিত হয় (5 থেকে 15 পিপস পর্যন্ত), সেগুলোকে সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেল হিসাবে বিবেচনা করা উচিত।
7) স্টপ লস: উদ্দেশ্যমূলক দিকে মূল্যের 15 পিপস মুভমেন্ট হওয়ার পর, ব্রেক-ইভেনে স্টপ লস সেট করা উচিত।
চার্টে কী কী আছে:
সাপোর্ট এবং রেজিস্ট্যান্স লেভেলগুলো হল সেই লেভেল যা কারেন্সি পেয়ার কেনা বা বিক্রি করার সময় লক্ষ্যমাত্রা হিসাবে কাজ করে। আপনি এই লেভেলগুলোর কাছাকাছি টেক প্রফিট সেট করতে পারেন।
লাল লাইন হল চ্যানেল বা ট্রেন্ড লাইন যা বর্তমান প্রবণতা প্রদর্শন করে এবং দেখায় যে এখন কোন দিকে ট্রেড করা ভাল হবে।
MACD (14,22,3) সূচক, হিস্টোগ্রাম এবং সিগন্যাল লাইন উভয়ই অন্তর্ভুক্ত করে, এটি একটি সহায়ক টুল হিসেবে কাজ করে এবং এটি সিগন্যালের উৎস হিসেবেও ব্যবহার করা যেতে পারে।
গুরুত্বপূর্ণ বক্তৃতা এবং প্রতিবেদন (সর্বদা নিউজ ক্যালেন্ডারে অন্তর্ভুক্ত থাকে) যেকোন কারেন্সি পেয়ারের মূল্যের গতিশীলতাকে ব্যাপকভাবে প্রভাবিত করতে পারে। অতএব, এগুলো প্রকাশের সময় অত্যন্ত সতর্কভাবে ট্রেডিং করতে হবে। চলমান প্রবণতার বিপরীতে আকস্মিকভাবে মূল্যের পরিবর্তন থেকে সুরক্ষিত থাকতে মার্কেট থেকে বের হয়ে যাওয়াই যুক্তিসঙ্গত হতে পারে।
নতুন ট্রেডারদের সর্বদা মনে রাখতে হবে যে প্রতিটি ট্রেড থেকে লাভ হবে না। একটি সুস্পষ্ট কৌশল গ্রহণ ও কার্যকর অর্থ ব্যবস্থাপনাই দীর্ঘমেয়াদে ট্রেডিংয়ের সাফল্যের ভিত্তি হিসেবে কাজ করে।